১২ টি পড়া মনে রাখার উপায়

Way To Remember Reading

সর্বশেষ আপডেটঃ

/

ক্যাটাগরিঃ

পড়া মনে রাখার উপায় জেনে আগত বিসিএস ও সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি দৃঢ় করুন। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে হলে অবশ্যই আমাদের দীর্ঘদিন পড়া মনে রাখা প্রয়োজন। পড়া মনে রাখার বেশ কিছু কৌশল আছে যেগুলো অবলম্বন করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত পড়া মনে রাখা সম্ভব। অনেক শিক্ষার্থী এই কৌশলগুলো অবলম্বন করে পড়াশোনা করে এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে। আজকের আর্টিকেলটি পড়া মনে রাখার সহজ উপায় নিয়ে সাজানো হয়েছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

পড়াশোনা কেন করতে হবে?

নতুন কিছু শেখার জন্য আমাদের পড়াশোনা করতে হবে। নিজের জ্ঞান বৃদ্ধি করতে এবং নিজের জীবনকে আরও উন্নত করতে হলে আমাদের পড়াশোনা করা প্রয়োজন। তাছাড়াও মানুষের সাথে কিভাবে সুন্দরভাবে গুছিয়ে কথা বলা যায় তা একমাত্র পড়াশোনার মাধ্যেমেই জানা যায়।

কোন সময় পড়াশোনা করা উচিত?

পড়াশোনা করার জন্য নির্দিষ্ট ধরা বাঁধা কোন সময় নেই। আপনার যে সময়ে পড়াশোনায় মনোযোগ আসবে আপনি সে সময়ে পড়াশোনা করতে পারেন। তবে, পড়াশোনা করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে পড়াশোনা করা উচিত। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা সাধারণত সকাল, বিকাল, সন্ধ্যা এবং মধ্যরাতে পড়াশোনা করেন। তাই আপনারও একটি সঠিক সময় নির্ধারণ করে পড়াশোনা করা উচিত। এ বিষয়ে আরও ভালোভাবে জানতে “কোন সময় কোন বিষয় পড়া উচিত?” শীর্ষক পোস্টটি পড়তে পারেন।

১২ টি পড়া মনে রাখার উপায় সমূহ

বিসিএস কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে হলে নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে। শুধু পড়াশোনা করলেই হবে না পড়া মনে রাখার কৌশলগুলো অবলম্বন করে সঠিক সময় নির্ধারণ করে পড়াশোনা করতে হবে। নিচে পড়া মনে রাখার উপায় সমূহ উল্লেখ করা হলো।

১। রুটিনমাফিক পড়াশোনা করা।

পড়াশোনা করার জন্য অবশ্যই একটি রূটিন থাকা প্রয়োজন। কেননা রুটিন অনুযায়ী নিয়মিত পড়াশোনা করলে পড়া মনে থাকবে। তাই একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে রুটিনমাফিক পড়াশোনা করা উচিত।

২। লিখে কিখে পড়ার অভ্যাস করা।

দীর্ঘদিন পড়া মনে রাখতে চাইলে লিখে লিখে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কেননা খাতায় লিখে লিখে পড়লে আমাদের ব্রেনের অনেক বেশি এলাকা উদ্দীপ্ত হয়। লেখার সাথে ব্রেনের যে অংশগুলো জড়িত তা তথ্যকে স্থায়ী মেমোরীতে রূপান্তর করতে অনেক সহয়তা করে। এছাড়াও লিখে লিখে পড়ার ফলে সহজে পড়া মুখস্থ হয়ে যায় এবং পড়াশোনায় মনোযোগ সৃষ্টি হয়। তাই আপনি আজ থেকে লিখে লিখে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

৩। মার্কার ব্যবহার করে পড়াশোনা করা।

পড়া মনে রাখার জন্য মার্কার ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যে বিষয় পড়ছেন সে বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো মার্কার দিয়ে দাগিয়ে রাখতে পারেন। অনেকেই পড়ার সময় মার্কার দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো দাগিয়ে রাখেন, এটা বেশ কার্যকর। কারণ মার্ক করা গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো পরবর্তী সময়ে পড়লে তা সহজেই মুখস্থ হয়ে যায়। ফলে দীর্ঘদিন যাবৎ পড়া মনে থাকে।

৪। অল্প অল্প করে মনোযোগ সহকারে পড়া।

কোন কিছু মনে রাখতে হলে তা বিভিন্ন অংশে ভাগ ভাগ করে পড়া বেশ উপকারী। তাই পড়াশোনা করার সময় অল্প অল্প করে মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে সহজে পড়া মনে থাকবে। আমাদের পাঠ্য বইয়ে বড় বড় সংজ্ঞা দেওয়া থাকে, এগুলো আমাদের সহজে মুখস্থ হয় না কিন্তু যদি এই বড় সংজ্ঞাগুলোকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে পড়লে তা মনে রাখা সহজ। কারণ আমাদের ব্রেন বড় বিষয়ের থেকে ছোট বিষয় বেশি মনে রাখতে পারে।

৫। বিরতি নিয়ে রিভিশন দেওয়া।

পড়াশোনা করার পর কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে তারপর রিভিশন দেওয়া। গবেষণায় দেখা গেছে, কোন কিছু পড়ার এক ঘন্টার পর আমাদের মাত্র ৪৪ শতাংশ মনে থাকে। তাই পড়াশোনা শেষ করার পর তাৎক্ষণিক রিভিশন না দিয়ে কিছু সময় পর পড়া রিভিশন করতে পারেন। পড়ার মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে বারবার পড়লে যেকোনো পড়াই অনেকদিন মনে থাকে।

৬। বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্ট্যাডি করতে পারেন।

পড়া মনে রাখার অন্যতম সহজ উপায় হচ্ছে বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্ট্যাডি করা। কেননা গ্রুপ স্ট্যাডি করা মাধ্যেমে যেকোন পড়া সহজে বোঝা যায় এবং দ্রুত সময়ে মুখস্থ করা যায়। আপনার যে বিষয়ে বুঝতে সমস্যা হচ্ছে তা বন্ধুদের সাথে আলোচনা করলে তা সহজেই বোঝা যায়। তাই আপনি যদি দীর্ঘদিন যাবৎ পড়া মনে রাখতে চান তবে বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্ট্যাডি করতে পারেন।

৭। হেঁটে হেঁটে পড়াশোনা করা।

একটানা অনেক সময় ধরে পড়ার পর আর পড়তে ভালো লাগে না। তাই আপনার যদি এই সময়ে পড়তে ভালো না লাগে তবে আপনি হেঁটে হেঁটে পড়তে পারেন। এতে আপনার পড়াটাও দ্রুত সময়ের মধ্যে মুখস্থ হয়ে যাবে এবং অনেকদিন মনেও থাকবে।

৮। মনযোগ সহকারে পড়ুন।

পড়া মনে রাখার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো মনোযোগ সহকারে পড়া। মনোযোগ সহকারে পড়লে দ্রুত পড়া মুখস্থ হয় এবং আপনি যে বিষয়ে শিখতে চাচ্ছেন তা ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। তাই আপনি পড়া মুখস্থ করার জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বন করেন না কেন মনোযোগ সহকারে না পড়লে কোনভাবেই পড়া মুখস্থ করতে পারবেন না এবং বুঝতেও পারবেন না। তাই অনেকদিন পড়া মনে রাখার জন্য আমাদের মনোযোগ সহকারে পড়া উচিত।

৯। সারমর্ম তৈরি করে পড়ুন।

দীর্ঘদিন পড়া মনে রাখার জন্য সারমর্ম তৈরি করে পড়তে পারেন। আপনার যদি কোন বড় অধ্যায়ের পড়া থাকে তা একবার ভালোভাবে পড়ে বুঝে নিতে হবে। এরপর উক্ত বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো খাতায় নোট করতে হবে। এবার এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো সারমর্ম তৈরি করে রাখুন। এরপর উক্ত অধ্যায়ের যে বিষয়টা প্রয়োজন হবে তখন আপনি দেখে নিতে পারেন। পড়া মনে রাখার জন্য ভালো উপায় হলো প্রতিটা বিষয়ে সারমর্ম তৈরি করে পড়া।

১০। অন্যদের সাথে পড়া শেয়ার করতে পারেন।

অনেকদিন যাবৎ পড়া মনে রাখার অন্যতম সেরা উপায় হচ্ছে অন্যদের সাথে পড়া শেয়ার করা। আপনি আজকে যে পড়াটা মুখস্থ করলেন আগামীকাল সে পড়াটা আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এতে করে আপনার পড়ায় যদি কোন ধরনের সমস্যা থাকে তবে তা জেনে নিতে পারবেন। তাছাড়াও পড়া বুঝতে সমস্যা হলে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে সমাধান করতে পারেন।

১১। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।

পড়া মনে রাখতে হলে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের প্রয়োজন। দীর্ঘ সময় ধরে পড়াশোনা করার পর আমাদের ব্রেন ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই আমাদের ব্রেনের কিছু সময়ের জন্য বিশ্রামের প্রয়োজন। ব্রেনের বিশ্রামের জন্য আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।

১২। পড়া রিভাইজ করতে পারেন।

দীর্ঘদিন ধরে পড়া মনে রাখতে হলে আমাদের প্রতিনিয়ত পড়া রিভাইজ করতে হবে। আজকের পড়াটা আগামীকাল মনে না ও থাকতে পারে তাই প্রতিনিয়ত আমাদের পড়া রিভাইজ করতে হবে। তবেই আমাদের পড়া মনে থাকবে।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নসমূহ

পড়া মনে রাখার উপায় এই বিষয়ে হয়তোবা আপনার মনে কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্নের উত্তর-

পড়া মনে রাখার সহজ উপায় কি?

পড়া মনে রাখার বেশ কিছু সহজ উপায় রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করে পড়াশোনা করলে দীর্ঘদিন পড়া মনে থাকে। পড়া মনে রাখার সহজ উপায়গুলো হলোঃ মনোযোগ সহকারে পড়া, গ্রুপ স্ট্যাডি করা, অন্যদের সাথে পড়া শেয়ার করা, হেঁটে হেঁটে পড়া, পড়া রিভাইজ করা, সারমর্ম তৈরি করে পড়া ইত্যাদি।

দ্রুত পড়া মুখস্থ করার উপায় কি?

দ্রুত সময়ের মধ্যে পড়া মুখস্থ করতে হলে মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে এবং আপনি যে বিষয় টি পড়ছেন সে বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে হবে। তাহলে আপনি দ্রুত পড়া মুখস্থ করতে পারবেন।

উপসংহার

পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য আমাদের দীর্ঘদিন পড়া মনে রাখতে হবে। পড়া মনে না থাকলে পরীক্ষার খাতায় গুছিয়ে সুন্দরভাবে লেখা সম্ভব নয়। এছাড়াও চাকরির প্রস্তুতি মজবুত করতে কিভাবে দ্রুত পড়া মুখস্থ করা যায় এই বিষয়ে পড়ুন।

“পড়া মনে রাখার উপায়” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *