তথ্যের উৎস কত প্রকার ও কি কি?

Type of Data Source

তথ্যের উৎস কত প্রকার ও কি কি এই সমন্ধে পড়ে বিসিএস কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেন। বিগত সালের সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলোতে তথ্যের উৎস সম্পর্কে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এসেছিল। তাই আপনারা যারা এ বছর সরকারি চাকরি কিংবা বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রতিনিয়ত পড়াশোনা করছেন তারা তথ্যের উৎস সমন্ধে পড়ে জেনে রাখতে পারেন। আজকের এই পোস্টটি তথ্যের উৎস কত প্রকার ও কি কি এই বিষয়গুলো নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।   

তথ্য সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য 

তথ্য বলতে মূলত কোন কোন বিষয়, ঘটনা, বা কাজের সম্পর্কে যে সমস্ত উপাদান বা বিবরণ থাকে তাকেই তথ্য বলা হয়। কোন নির্দিষ্ট একটি বিষয় সম্পর্কে জানা বা গবেষণা করার জন্য অথবা কোন সমস্যা সমাধান করার জন্য অনুসন্ধান কার্যের মাধ্যমে ঐ বিষয় সম্পর্কে বা গবেষণার বিষয় সম্পর্কিত অথবা সমস্যা সম্পর্কিত যা কিছু সংগ্রহ করা হয় তাকেই তথ্য বলতে বোঝানো হয়ে থাকে। 

তথ্যের উৎস কত প্রকার ও কি কি?

বর্তমানে তথ্য ছাড়া কোন কাজই করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো তথ্য। তবে তথ্য অবশ্যই সঠিক হতে হবে। সঠিক তথ্য যেমন উপকারি তেমনি ভুল তথ্য আবার আমাদের ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। তাই আপনারা যারা এ বছর বিসিএস কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির জন্য নিয়মিত পড়াশোনা করছেন তারা তথ্যর তথ্যের উৎস কত প্রকার ও কি কি এই বিষয়ে জেনে পরীক্ষার প্রস্তুতি একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। তথ্যের উৎসের ভিত্তিতে তথ্যকে মুলত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। তাহলো যথাক্রমে প্রাথমিক বা মূল তথ্য এবং মাধ্যমিক বা পরোক্ষ তথ্য। নিচে তথ্যের উৎস কত প্রকার ও কি কি উল্লেখ করা হলো-

১। প্রাথমিক তথ্য বা মূল তথ্য

কোন বিশেষ উদ্দেশ্য বা গবেষণার কাজের জন্য অনুসন্ধান ক্ষেত্র বা তথ্য বিশ্বের প্রতিটি অবস্থান থেকে সরাসরি যে তথ্য সংগ্রহ করা হয় তাকেই প্রাথমিক তথ্য বলা হয়। সংগৃহীত এ সকল তথ্যের উপর কোন ধরনের পরিসাংখ্যানীয় পদ্ধতি প্রয়োগের পূর্ব পর্যন্ত প্রাথমিক তথ্য বলে বিবেচনা করা হয়৷

প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতিসমূহ 

প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। তথ্য সংগ্রহের উপায় নির্বাচনের ক্ষেত্রে তথ্য পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্য, ব্যবহৃত পরিমাপের একক, তথ্যের নির্ভুলতা, তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতি ও প্রশ্নপত্রের উৎকর্ষতা ইত্যাদি সম্পর্কে ভালাভাবে জানতে হবে৷ নিম্নে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি সমূহ আলোচনা করা হলো-

  • সরাসরি ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ: সরাসরি ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে গবেষক বা অনুসন্ধানকারী ব্যক্তিগতভাবে তথ্য সংগ্রহ করেন৷ অনুসন্ধানকারী নিজে কার্যক্ষেত্রে গিয়ে উত্তরদাতার সাথে সাক্ষাৎ করে বা পর্যবেক্ষণ করে তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন৷
  • ডাক মারফত প্রশ্নপত্র সংগ্রহ পদ্ধতিঃ এ পদ্ধতিতে গবেষণার বিষয়বস্তুর উপর একটি সুন্দর ও সহজ প্রশ্নপত্র তৈরি করে ডাকযোগে উত্তরদাতার নিকট পাঠানো হয়৷ উত্তরদাতা প্রশ্নপত্রটি পূরণ করে ফেরত পাঠান৷ এতে সময় ও খরচ উভয়ই কম লাগে৷ অনেক সময় উত্তরদাতা প্রশ্নের অর্থ বুঝতে না পারলে ক্রটিপূর্ণ উত্তর দেন৷ আবার কেউ কেউ প্রশ্নপত্রটি ফেরতে পাঠান না অথবা উত্তরপত্র অসম্পন্ন করে পাঠান৷ সাধারণত মতামত যাচাই জাতীয় অনুসন্ধানে এ পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়৷ 
  • টেলিফোন সাক্ষাৎকার:  জরুরি ভিত্তিতে স্বল্প পরিসরের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য টেলিফোন সাক্ষাৎকার পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে৷ এতে অনেক সময় ও খরচ উভয়ই কম লাগে৷ তবে তথ্য সংগ্রহকারীর কথাবার্তা মার্জিত বা ভদ্র হওয়া বাঞ্ছনীয়৷ উত্তরদাতার টেলিফোন না থাকলে বা সে উপস্থিত না থাকলে তথ্য সংগ্রহ করতে অসুবিধা হয় বা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 
  • স্থানীয় উৎসঃ এই পদ্ধতিতে স্থানীয় প্রতিনিধি বা সংবাদ দাতার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে থাকে৷ বিশেষ করে অঞ্চলভিত্তিক তথ্য যেমনঃ শস্যের উৎপাদন, বন্যা পরিস্থিতি, অগ্নি ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎসের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
  • পরোক্ষ অনুসন্ধান: যেসব কঠিন বিষয়ে তথ্যদাতা গণনাকারীকে তথ্য সরবরাহ করতে চান না বা তথ্যদাতা সঠিক তথ্য দিবেন না বলে মনে হয়, সেক্ষেত্রে পরোক্ষ অনুসন্ধানের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। 

২। মাধ্যমিক বা পরোক্ষ তথ্য

যে তথ্য পরোক্ষ উৎস থেকে যেমনঃ কোন তথ্য কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সংগৃহীত হবার পর সেখান থেকে সংগ্রহ করা হয় বা কোন প্রকাশনা হতে সংগ্রহ করা হয় তখন তাকে মাধ্যমিক তথ্য বা পরোক্ষ তথ্য বলা হয়৷ মাধ্যমিক বা পরোক্ষ তথ্য সংগ্রহের কোন নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই। যে কেউ প্রাথমিক তথ্য ব্যাতীত মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে সেটি মূলত মাধ্যমিক বা পরোক্ষ তথ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। নিম্নে মাধ্যমিক বা পরোক্ষ তথ্যগুলো উল্লেখ করা হলো-

মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতিসমূহঃ

প্রকৃতপক্ষে মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহের কোন পদ্ধতি নেই৷ মাধ্যমিক তথ্য সাধারণত বিভিন্ন প্রকাশনা, প্রতিবেদন ,গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও  জার্নাল ইত্যাদি থেকে সংগ্রহীত হয়ে থাকে৷ নিম্নে মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতিসমূহ উল্লেখ করা হলো-

ক। প্রকাশিত উৎস

প্রকাশিত উৎস মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। নিম্নে সেগুলো উল্লেখ করা হলো-

  • সরকারি উৎস: সরকার তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নানা ধরনের প্রয়োজন ও পরিকল্পনার জন্য তথ্য সংগ্রহ করে থাকে৷ এ সকল তথ্যসমূহ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করে থাকে।
  • আধা সরকারি উৎস: দেশের বিশ্ববিদ্যলয় সমূহ, বাংলাদেশ ব্যাংক, বীমা, বাংলাদেশ বিমান, রাষ্ট্রায়ত্ত বাংক, মৎস্য উন্নয়ন বোর্ড প্রভৃতি আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের নিজেদের প্রয়োজনে ও গবেষণা কাজের জন্য নানা ধরনের জরিপ কাজের মাধ্যমে পরিসংখ্যানিক তথ্য সংগ্রহ এবং প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করে থাকে৷
  • বেসরকারি উৎস: বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমনঃ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, খাদ্য ও কৃষিসংস্থা, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিভিন্ন এনজিও ফার্ম প্রভৃতি তাদের প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের জরিপ কাজের মাধ্যমে পরিসংখ্যানিক তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশ করে থাকে৷ 
খ। অপ্রকাশিত তথ্য

কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন গবেষক কর্তৃক সংগৃহীত হয়েছে কিন্তু প্রকাশিত হয়নি শুধু ফাইলবন্ধী করা রাখা হয়েছে। এ সকল পরিসংখ্যানিক তথ্য সমূহকেই অপ্রকাশিত তথ্য বলা হয়ে থাকে৷ 

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

তথ্যের উৎস কত প্রকার ও কি কি এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তরগুলো। 

তথ্যের প্রধান উৎস কী?

তথ্যের প্রধান উৎস হলো কোনও ঘটনা যা ঘটার সময়ে সৃষ্ট হয়েছিল, বা ঐ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কেউ বর্ণনা করাই হলো তথ্যর প্রধান উৎস।

তথ্য কাকে বলে? 

কোন বিষয়, ঘটনা, বা কাজের সম্পর্কে যে সমস্ত উপাদান বা বিবরণ থাকে তাকেই তথ্য বলা হয়। 

উপসংহার

বিসিএস কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য তথ্যের উৎস সম্পর্কে পড়ে রাখা প্রয়োজন। বিগত সালের পরীক্ষাগুলোতে তথ্যের উৎস সম্পর্কিত বিষয় থেকে অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছে। তাই আগে থেকেই আপনাকে তথ্যের উৎস কত প্রকার ও কি কি পড়ে রাখা উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততি আরও বেশী শক্তিশালী করতে ৬ দফা গুলো কি কি? এই সম্পর্কে পড়তে পারেন।

তথ্যের উৎস কত প্রকার ও কি কি?” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে, তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *