বঙ্গবাণী কবিতার MCQ পড়ে স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের উত্তর দিন সহজেই। বিগত সালের উচ্চ মাধ্যমিক কিংবা চাকরির পরীক্ষাগুলোতে বঙ্গবাণী কবিতা থেকে অনেকগুলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আপনারা যারা এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক এবং চাকরির পরীক্ষার জন্য নিয়মিত পড়াশোনা করছেন তারা বঙ্গবাণী কবিতা সম্পর্কে কিছু প্রশ্নের উত্তর জেনে রাখতে পারেন। আজকের এই পোস্টটি বঙ্গবাণী কবিতার MCQ নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
বঙ্গবাণী কবিতার পাঠ পরিচিতি
বঙ্গবাণী কবিতাটি কবি আব্দুল হাকিমের “নূরনামা” কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে। মধ্যযুগীয় পরিবেশে বঙ্গভাষী এবং বঙ্গভাষার প্রতি এমন বলিষ্ঠ বানীবদ্ধ কবিতার নিদর্শন দুর্লভ। কবি এই কবিতায় তাঁর গভীর উপলব্ধি ও বিশ্বাসের কথা নির্দ্বিধায় ব্যক্ত করেছেন। আরবি কিংবা ফারসি ভাষার প্রতি কবির মোটেই বিদ্বেষ নেই। এসব আল্লাহ ও মহানবির স্তুতি বর্ণিত হয়েছে। তাই এসব ভাষার প্রতি সবাই পরম শ্রদ্ধাশীল দেখায়। যে ভাষা সাধারণ জণগনের বোধগম্য নয়, যে ভাষা অন্য মানুষের সাথে ভাব-বিনিময় করা যায় না সে সব ভাষাভাষী লোকের পক্ষে মাতৃভাষা কথা বা লেখাই একমাত্র পন্থা। এই কারণেই কবি মাতৃভাষা গ্রন্থ রচনায় মনোবিবেশ করেছেন।
কবির মতে, মানুষ মাত্রই নিজ ভাষায় স্রষ্টাকে ডাকে আর স্রষ্টাও মানুষের সকল মনের বক্তব্য বুঝতে পারেন। কবির চিত্তে তীব্র ক্ষোভ এজন্য যে, যারা প্রিয় বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে, অথচ বাংলা ভাষার প্রতি বিন্দুমাত্র মমতা নেই, তাদের বংশ ও জন্ম পরিচয় সম্পর্কে কবির সম্পর্ক রয়েছে। কবি বলেছেন, এসব লোক যাদের মনে স্বদেশের ও স্বভাষার প্রতি কিছুমাত্র অনুরাগ নেই তারা কেন এদেশ ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যায় না। বংশানুক্রমে, বাংলাদেশ আমাদের বসতি, বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি এবং মাতৃভাষায় বর্ণিত বক্তব্য আমাদের স্পর্শ মর্ম করে। এই ভাষার চেয়ে হিতকর আর কী হতে পারে।
বঙ্গবাণী কবিতার কবি পরিচিতি
বঙ্গবাণী কবিতার রচিয়তা হলেন আবদুল হাকিম। তিনি ১৬২০ খ্রিষ্টাব্দে সন্দ্বীপের সুধারামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মধ্যযুগের অন্যতম প্রধান কবি আবদুল হাকিমের স্বদেশের এবং স্বভাষার প্রতি ছিল অটুট ও অপরিসীম প্রেম। সেই যুগে মাতৃভাষার প্রতি এমন গভীর ভালোবাসার গভীর নিদর্শন ইতিহাসের পাতায় বিরল দৃষ্টান্ত এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কালজয়ী আদর্শ। নূরনামা ছিল আবদুল হাকিমের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। তাঁর অন্যন্যা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো- ইউসুফ জোলেখা, লালমতি, সয়ফুলমুলক, শিহাবুদ্দিননামা, নসীহৎনামা, কারবালা ও শহরনামা। তার কবিতায় অনুপম ব্যক্তিত্বের পরিচয় মেলে। কবি আবদুল হাকিম ১৬৯০ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
বঙ্গবাণী কবিতার MCQ সমূহ
মাধ্যমিক পরীক্ষা ও চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি সরূপ “বঙ্গবাণী” কবিতা থেকে MCQ পড়ে রাখা প্রয়োজন। আপনারা যারা এ বছর স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন তারা “বঙ্গবাণী” এই কবিতা থেকে বহু নির্বাচনী প্রশ্ন-উত্তরগুলো পড়ে জেনে রাখতে পারেন। নিচে বঙ্গবাণী কবিতার MCQ প্রশ্নের উত্তরগুলো দেখে নিন-
স্বদেশে থেকেও যারা স্বদেশের ভাষার প্রতি অবজ্ঞা দেখায় তারা প্রকৃতপক্ষে কী?
উত্তর: শিকড়বিহীন পরগাছা।
কবি কাদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
উত্তর: যারা নিজ ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি উদাসীন।
কবি কাদের জন্মের প্রতি সন্দিহান?
উত্তর: এদেশে জন্মে যারা বাংলা ভাষাকে ঘৃণা করে।
‘বঙ্গবাণী’ কবিতার মর্মকথা হিসেবে সমর্থনযোগ্য কথা কোনটি?
উত্তর: মাতৃভাষার প্রতি মমতা।
সবার প্রধান অবলম্বন হওয়া উচিত কোন ভাষা?
উত্তর: মাতৃভাষা।
‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় আরবি-ফারসি ভাষার প্রতি কবি আবদুল হাকিমের মনোভাব কেমন ছিল?
উত্তর: সহনশীল।
কোন কবিতায় কবি আবদুল হাকিম বাংলা ভাষার গুণকীর্তন করেছেন?
উত্তর: বঙ্গবাণী’ কবিতায়।
কবিতার প্রধান বাহন কী ছিল?
উত্তর: ভাব।
বঙ্গবাণী’ কবিতাটি কোন শতকে রচনা করা হয়?
উত্তর: সপ্তদশ শতকে।
বঙ্গবাণী’ কবিতাটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে?
উত্তর: নূরনামা।
‘বঙ্গবাণী’ কবিতার রচয়িতার নাম কী?
উত্তর: আবদুল হাকিম।
‘মারফত’ শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর: মরমি সাধনা।
‘ছিফত’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: গুণ।
‘ছিফত’ শব্দটি কোন ভাষার?
উত্তর: আরবি।
‘বঙ্গবাণী’ কবিতার শেষ চরণ কোনটি?
উত্তর: দেশি ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি।
বাংলা ভাষার চেয়ে হিতকর বলে কিছু হতে পারে না কাদের জন্য?
উত্তর: বাংলা যাদের মাতৃভাষা।
‘মাতা পিতামহ ক্রমে বঙ্গেত বসতি’ পঙ্ক্তিটির মানে কী-?
উত্তর: বংশানুক্রমে বাংলাদেশে আমাদের বসতি।
বাংলা ভাষার অবজ্ঞাকারীকে কবি কোথায় চলে যেতে বলেছেন?
উত্তর: বিদেশে বা অনত্রে।
নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশ ন যায়’ এখানে ‘তেয়াগী’ অর্থ কী হবে?
উত্তর: ত্যাগ করে।
‘সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি’ কবি আবদুল হাকিম কাদের সম্পর্কে এ উক্তি করেছেন?
উত্তর: বাংলাদেশে যারা বাংলা ভাষাকে ঘৃণা করে।
বঙ্গবাণী’ কবিতার প্রধান বাহন কী?
উত্তর: মাতৃভাষা।
‘হিন্দুর অক্ষরে হিংসে সে সবের গণ’ ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি কাদের সম্পর্কে এ মন্তব্য করেছেন?
উত্তর: যারা মরমি সাধনা সম্পর্কে অবগত নয়।
কারা হিন্দুর অক্ষর’ হিংসা করে?
উত্তর: মারফতে জ্ঞানহীনরা।
কবি ‘হিন্দুর অক্ষর’ বলতে মূলত কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: বাংলা ভাষা।
‘যত ইতি বাণী’ বলতে কবি আবদুল হাকিম কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: মাতৃভাষা।
‘বঙ্গদেশী বাক্য’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: প্রাচীন বঙ্গীয় ভাষা।
দেশি ভাষায় কাব্য রচনা করার পেছনে কবি আবদুল হাকিমের যুক্তি হলো, দেশি ভাষা কী?
উত্তর: সকল মানুষের জন্য উপকারী।
আল্লাহ সব ভাষা বোঝেন বলে এই কথাটি কোন ’কবিতায় উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: বঙ্গবাণী।
‘আল্লাহ নবীর ছিফত’ এর অর্থ কী?
উত্তর: আল্লাহ ও নবীর গুণকীর্তন।
দেশী ভাষে বুঝিতে ললাটে পুরে ভাগ- এখানে ‘ভাগ’ অর্থ কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ভাগ্য।
সে সবে কহিল মোতে’ বাক্যাংশের ভাবার্থ হিসেবে নিচের কোনটি সমর্থন করা যায়?
উত্তর: তারা সবাই আমাকে বলল।
সে সবে কহিল মোতে মনে হাবিলাষ’ এখানে ‘হাবিলাষ’ অর্থ কী?
উত্তর: অভিলাষ।
কবি আবদুল হাকিম কাদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে কাব্যরচনা করেন?
উত্তর: যাদের বইপত্র পড়ার অভ্যাস নেই।
কবি আব্দুল হাকিমের কবিতায় কোনটির পরিচয় মিল খুঁজে পাওয়া যায়?
উত্তর: অনুপম ব্যক্তিত্বের।
কবি আবদুল হাকিম মৃত্যুবরণ করেন কত খ্রিষ্টাব্দে?
উত্তর: ১৬৯০ খ্রিষ্টাব্দে।
কবি আবদুল হাকিম কাদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে কাব্যরচনা করেন?
উত্তর: যাদের বইপত্র পড়ার অভ্যাস নেই।
নিচের কোন কাব্যগ্রন্থটি আবদুল হাকিমের রচনা?
উত্তর: শহরনামা।
কবি আবদুল হাকিম রচিত কাব্য নয় কোনটি?
উত্তর: রক্তরাগ।
‘লালমতি ও সয়ফুলমুলক’ কী?
উত্তর: আবদুল হাকিমের কাব্যগ্রন্থ।
‘লালমতি’ কার লেখা কাব্যগ্রন্থ?
উত্তর: আবদুল হাকিমের।
‘ইউসুফ জোলেখা’ কী?
উত্তর: আবদুল হাকিমের কাব্যগ্রন্থ।
আবদুল হাকিম কোন যুগের কবি?
উত্তর: মধ্যযুগের।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
বঙ্গবাণী কবিতার MCQ প্রশ্নের উত্তর এই বিষয় নিয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্নের উত্তর-
আবদুল হাকিম কে ছিলেন?
সপ্তদশ শতকের একজন প্রখ্যাত কবি ছিলেন আবদুল হাকিম।
কবি আবদুল হাকিমের জন্মস্থান কোথায়?
কবি আবদুল হাকিমের জন্মস্থান সন্দ্বীপের সুধারামপুরে।
আবদুল হাকিম জন্মগ্রহণ করেন কত খ্রিষ্টাব্দে?
আবদুল হাকিম আনুমানিক ১৬২০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
উপসংহার
মাধ্যমিক কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততির জন্য বঙ্গবাণী কবিতা থেকে MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা প্রয়োজন। বিগত সালের পরীক্ষাগুলোতে বঙ্গবাণী কবিতা থেকে অনেকগুলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আগে থেকেই আপনাকে বঙ্গবাণী কবিতার MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততি আরও বেশী শক্তিশালী করতে সোনার তরী কবিতার MCQ সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“বঙ্গবাণী কবিতার MCQ প্রশ্নের উত্তর” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ!
Leave a Reply