সোনার তরী কবিতার MCQ পড়ে স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নের উওর দিতে পারবেন সহজেই। কেননা বিগত সালের এইচএসসি পরীক্ষাগুলোতে সোনার তরী কবিতা থেকে অনেকগুলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আপনারা যারা এ বছর স্কুল-কলেজ ও চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নিয়মিত পড়াশোনা করছেন। তারা সোনার তরী কবিতার আলোচ্য বিষয়সহ কতিপয় সকল খুঁটিনাটি প্রশ্নের উত্তর জেনে পরীক্ষার প্রস্তুতি আরও বেশী দৃঢ় করতে পারেন। আজকের এই পোস্টটি সোনার তরী কবিতার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ MCQ নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই এই পোস্টটি অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
সোনার তরী কবিতার পাঠ পরিচিতি
‘সোনার তরী’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থের নাম কবিতা। শতাধিক বছর ধরে এ কবিতা বিপুল আলোচনা ও নানামূখী ব্যাখ্যায় নতুন নতুন তাৎপর্যে অভিষিক্ত। একই সঙ্গে, কবিতাটি গূঢ় রহস্য ও শ্রেষ্ঠত্বেরও স্মারক। মহৎ সাহিত্যের একটি বিশেষ গুণ হলো কালে কালে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও বিবেচনার আলোকে তার শ্রেষ্ঠত্ব নিরুপিত হতে থাকে। বাংলা কবিতার ইতিহাসে ‘সোনার তরী’ তেমনি আশ্চর্য সুন্দর। এক চিরায়িত আবেদনবাহী কবিতা।
কবিতাটিতে দেখা যায়, চারপাশের প্রবল স্রোতের মধ্যে জেগে থাকা দ্বীপের মতো ছোট একটি ধানক্ষেতে উৎপন্ন সোনার ধানের সম্ভার নিয়ে অপেক্ষারত নিঃসঙ্গ এক কৃষক। আকাশের ঘন মেঘ আর ভারী বর্ষণে পাশের খরাস্রোতা নদী হয়ে ওঠেছে অনেক হিঃস্র। চারদিকে ‘বাঁকা জল’ কৃষকের মনে সৃষ্টি করেছে ঘনঘোর আশংকা। এরকম এক পরিস্থিতে ওই খরাস্রোতা নদীতে একটি ভরাপাল সোনার নৌকা বেয়ে আসা এক মাঝিকে দেখা যায়। উৎকণ্ঠিত কৃষক নৌকা কূলে ভিড়িয়ে তার উৎপাদিত সোনার ধান নিয়ে যাওয়ার জন্য মাঝিকে মিনতি জানালে ওই সোনার ধানের সম্ভার নৌকায় তুলে নিয়ে মাঝি চলে যায়। ছোট নৌকা বলে স্থান সংকুলান হয় না কৃষকের। শূণ্য নদীর তীরে আশাহত কৃষকের বেদনা গুমড়ে মরে।
এ কবিতায় নিবিড়ভাবে মিশে আছে কবির জীবনদর্শন। মহাকালের স্রোতে জীবন-যৌবন ভেসে যায়, কিন্তু বেঁচে থাকে মানুষের সৃষ্ট সোনার ফসল। তার ব্যক্তিস্তত্তা ও শারীরিক অস্তিত্বকে নিশ্চিতভাবে হতে হয় মহাকালের নিষ্ঠুর কালাগ্রাসের শিকার। “সোনার তরী” মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। এর অধিকাংশ পংক্তি ৮+৫ মাত্রার পূর্ণপর্বে বিন্যস্ত।
সোনার তরী কবিতার কবি পরিচিতি
সোনার তরী কবিতার কবিতার রচিয়তা হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ই মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মাতার নাম সারদা দেবী। বিশ্বকবি অভিধায় সম্ভাষিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ছোট গল্পের উদ্ভব, বিকাশ, ও সমৃদ্ধি ঘটেছে। অসামান্য প্রতিভার অধিকারী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আধুনিক বাংলা কবিতার প্রাণপুরুষ। তাঁর ছোট গল্প বিশ্ব সাহিত্যের শেষ্ঠ ছোটগল্পগুলো সমতুল্য।
১২৮৪ বঙ্গাব্দে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ‘ভিখারিনী’ গল্প রচনার মাধ্যেমে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত দীর্ঘ ৬৪ বছরে তিনি অখন্ড ‘গল্পগুচ্ছে’ সংকলিত ৯৫ টি ছোটগল্প রচনা করেছেন। এর বাইরে ‘সে’ গল্পস্বল্প এবং লিপিকা’ তার আরও গল্প সংকলিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সর্বশেষ রচিত গল্পটির নাম ‘মুসলমানীর গল্প’।
গল্পকার হিসেবে তিনি যেমন বরণ্য, ঔপন্যাসিক হিসেবেও বাংলা সাহিত্যে তার স্থান সুনির্দিষ্ট। তার রচিত উপন্যাস গুলো হলোঃ ‘চোখের বালি, গোরা, চতুরঙ্গ, ঘরে-বাইরে, শেষের কবিতা, যোগাযোগ ইত্যাদি। এছাড়াও তিনি অনেক নাটক রচনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলোঃ রাজা, অচলায়তন, ডাকঘর, মুক্তধারা, রক্তকরবী ইত্যাদি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট (১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২এ শ্রাবণ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সোনার তরী কবিতার MCQ প্রশ্ন ও উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিক ও চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি সরূপ “সোনার তরী” এ কবিতা থেকে MCQ পড়ে রাখা প্রয়োজন। আপনারা যারা এ বছর স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন তারা “সোনার তরী” এই কবিতার বহু নির্বাচনী প্রশ্ন-উত্তরগুলো জেনে রাখতে পারেন। নিচে সোনার তরী কবিতার MCQ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো দেখে নিন-
ধান কাটতে কাটতে কী এল-?
উত্তর: বর্ষা।
‘সোনার তরী’ কবিতায় কোথায় মেঘ গর্জন করার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: আকাশ জুড়ে।
সোনার তরী’ কবিতায় মূলত কয়টি চরিত্রের সন্ধান খুঁজে পাওয়া যায়-?
উত্তর: দুইটি।
“ভরসা’ শব্দটির অর্থ কী হবে?
উত্তর: আশা।
‘সোনার তরী’ কবিতায় ‘সোনার ধান’ এটি আসলে কী?
উত্তর: মানুষের সৃষ্টিকর্ম।
‘সোনার তরীর’ মাঝি অতৃপ্তির বেদনা নিয়ে কেন অপেক্ষা করতে থাকে?
উত্তর: মহাকালের শূন্যতায় বিলীন হওয়ার জন্য।
‘সোনার তরী’ কবিতায় কবি সৃষ্টিকর্মকে কবি কী হিসেবে কল্পনা করেছে?
উত্তর: ফসল।
ফসল উৎপাদনকারী কৃষক বলতে কবি এখানে কাকে কল্পনা করেছেন?
উত্তর: নিজেকে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ তারিখে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ ই মে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
রবীন্দ্রনাথের পিতার নাম কী-?
উত্তর: দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
রবীন্দ্রনাথের মাতার নাম কী-?
উত্তর: সারদা দেবী।
‘নদী’ শব্দটির প্রতিশব্দ হিসেবে কোনটি সমর্থনযোগ্য?
উত্তর: তটিনী।
‘বাঁকা জল’ কিসের প্রতীক?
উত্তর: কালস্রোতের।
মানুষের জীবন কেমন?
উত্তর: ক্ষণস্থায়ী।
‘দৃষ্টি’ শব্দটি ব্যাকরণের কোন নিয়মে সম্পন্ন হয়েছে?
উত্তর: প্রকৃতি প্রত্যয়।
‘ভারা ভারা’ শব্দটি এখাবে কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর: রাশি রাশি।
‘গরজে’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: গর্জন করে।
‘ভারা ভারা’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ভারা অর্থ ধান রাখার পাত্র। এরকম পাত্রের সমষ্টি বোঝাতে এখানে ব্যবহৃত হয়েছে।
‘খরপারশা’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ধারালো বর্শা।
‘আমি’ বলতে এখানে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: সাধারণ অর্থে কৃষক। প্রতীকী অর্থে শিল্পস্রষ্টা কবি।
‘ওগো, তুমি কোথায় যাও, কোন বিদেশে? এই শব্দটি অর্থ কী হবে?
উত্তর: নির্বিকার মাঝির দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কৃষক বা কবির চেষ্টা। ‘বিদেশ’ এখানে চিরায়ত শিল্পলোকের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
নির্বিকার মাঝিকে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কিসের কৃষক চেষ্টা করেছেন –?
উত্তর: তার সোনার ফসল তুলে নেয়ার জন্য।
মাঝি মূলেতে তরী ভিড়ালো কেন?
উত্তর: ফসলের জন্য।
সোনার তরীতে কেন কৃষকের ঠাঁই হলো না?
উত্তর: কৃষকের সোনার ধানে তরীটি ভরে গিয়েছিল।
‘সোনার তরী’ কবিতায় ‘শূন্য নদীর তীরে’ এখানে কে একা পড়ে থাকল?
উত্তর: কৃষক।
‘তরুছায়ামসী-মাখা’ বলতে এখানে কী বুঝানো হয়েছে?
উত্তর: গাছপালার ছায়ায় কালচে রং মাখা।
‘থরে বিথরে’ শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর: সুবিন্যস্ত করে।
‘সোনার তরী’ কবিতায় কূলে একা কে বসে আছে?
উত্তর: কৃষক।
কী কাটা সারা হলো?
উত্তর: ধান।
কূল শব্দের অর্থ কী হবে?
উত্তর: কিনারা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম কী?
উত্তর: ভানুসিংহ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন?
উত্তর: ১৯৪১ সালের ৭ ই আগস্ট তারিখে।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
সোনার তরী কবিতার MCQ প্রশ্ন ও উত্তর এই বিষয় নিয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সমস্ত সকল প্রশ্নের উত্তর-
‘ক্ষুরধারা’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে?
‘ক্ষুরধারা’ বলতে এখানে ক্ষুরের মতো ধারালো প্রবাহ বা স্রোত বোঝানো হয়েছে।
‘সোনার তরী’ কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত হয়েছে?
‘সোনার তরী’ কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত হয়েছে।
উপসংহার
এইচএসসি কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রস্ততির জন্য সোনার তরী কবিতা থেকে MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা প্রয়োজন। বিগত সালের এইচএসসি পরীক্ষাগুলোতে সোনার তরী কবিতা থেকে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আগে থেকেই আপনাকে সোনার তরী কবিতার MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততি আরও বেশী শক্তিশালী করতে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার MCQ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো পড়তে পারেন।
“সোনার তরী কবিতার MCQ” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।
Leave a Reply