প্রতিদান কবিতার MCQ পড়ে স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নের উওর দিতে পারবেন সহজেই। কেননা বিগত সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাগুলোতে প্রতিদান কবিতা থেকে অনেকগুলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আপনারা যারা এ বছর স্কুল-কলেজ ও চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নিয়মিত পড়াশোনা করছেন। তারা প্রতিদান কবিতার আলোচ্য বিষয়সহ কতিপয় সকল খুঁটিনাটি প্রশ্নের উত্তর জেনে পরীক্ষার প্রস্তুতি আরও বেশী শক্তিশালী করে নিতে পারেন। আজকের এই পোস্টটি প্রতিদান কবিতার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ MCQ নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই এই পোস্টটি অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
প্রতিদান কবিতার পাঠ পরিচিতি
‘প্রতিদান’ এই কবিতাটি পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের ‘বালুচর’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত করা হয়েছে। এ কবিতায় কবি ক্ষুদ্র সার্থকে বিসর্জন দিয়ে পরার্থপরতার মধ্যেই যে ব্যক্তির প্রকৃত সুখ ও জীবনের সার্থকতা নিহিত সেই বিষয় আলোকপাত করেছেন। সমাজ-সংস্কার বিদ্যমান বিভেদ-হিংসা হানাহানি দ্বারা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও কবির কন্ঠে প্রতিশোধ-প্রতিহিংসার বিপরীতে ব্যক্ত হয়েছে প্রীতিময় এক পরিবেশের আকাঙ্ক্ষা। কেননা ভালোবাসা পূর্ণ মানুষই নির্মাণ করতে পারে সুন্দর ও নিরাপদ পৃথিবী। কবি অনিষ্টকারীকে ক্ষমা করে নয়, বরং প্রতিদান হিসেবে অনিষ্টকারীর উপকার করার মাধ্যেমে পৃথীবিকে সুন্দর ও বাসযোগ্যর স্থান করতে চেয়েছেন।
প্রতিদান কবিতার কবি পরিচিতি
প্রতিদান কবিতার রচিয়তা হলেন জসীমউদ্দীন। তিনি ১৯০৩ সালের পহেলা জানুয়ারি ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আনসারউদ্দীন মোল্ল্যা এবং তার মায়ের নাম আমিনা খাতুন। তার পৈতৃক নিবাস ফরিদপুরের গোবিন্দপুর গ্রামে। ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আইএ ও বিএ পাস করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। কলেজে অধ্যয়নকালে ‘কবর’ কবিতা রচনা করে তিনি অনেক খ্যাতি অর্জন করেন এবং ছাত্রবস্থায়ই কবিতাটি স্কুল পাঠ্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জসীমউদ্দীন ‘পল্লি কবি’ হিসেবে সমাধিক পরিচিত। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপনা করেন। এরপর সরকারের প্রচার ও জনসংযোগ বিভাগে উচ্চপদে অসীন হন। পল্লীজীবন তাঁর কবিতার প্রধান উপজীব্য। বাংলার গ্রামীন জীবনের আবহ, সহজ ও সরল প্রাকৃতিক রুপ উপযুক্ত শব্দ উপমা ও চিত্রের মাধ্যেমে তার কাব্য অনন্য সাধারণ মাত্রায় মূর্ত হয়ে ওঠেছে। তার বিখ্যাত ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ কাব্যটি বিভিন্ন বিদেশী ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর অন্যন্য জনপ্রিয় ও সমাদৃত গ্রন্থ হচ্ছঃ সোজন বেদিয়ার ঘাট, বালুচর, ধানক্ষেত, এবং রঙিলা ন্যায়ের মাঝি উল্লেখযোগ্য। সাহিত্যকৃতির স্বীকৃতি হিসেবে কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রী প্রদান করেন। জসীমউদ্দীন ১৯৭৬ সালের ১৪ ই মার্চ তারিখে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
প্রতিদান কবিতার MCQ প্রশ্ন ও উত্তর
এইচএসসি ও চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি সরূপ “প্রতিদান” এ কবিতা থেকে MCQ পড়ে রাখা প্রয়োজন। আপনারা যারা এ বছর এইচএসসি কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন তারা “প্রতিদান” এই কবিতার বহু নির্বাচনী প্রশ্ন-উত্তরগুলো জেনে রাখতে পারেন। নিচে প্রতিদান কবিতার MCQ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো দেখে নিন-
প্রতিদান’ কবিতায় কবি কী কী বেঁধে রাখার কথা বলেছেন-?
উত্তর: ঘর ও কূল।
‘আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর’ –এ পদ্ধত্তিটি প্রতিদান কবিতায় কত বার ব্যবহার করা হয়েছে?
উত্তর: দুইবার।
কবি তাঁর ঘুম হরণকারীর জন্য দীঘল রজনী জেগে কিসের পরিচয় দিয়েছেন?
উত্তর: মহত্ত্বের।
দীঘল রজনী জেগেছেন কে-?
উত্তর: কবি।
কেন কবি দীঘল রজনী জেগেছেন?
উত্তর: মহৎ বলে।
‘প্রতিদান’ কবিতায় উল্লিখিত রজনী/রাত কেমন ছিল?
উত্তর: দীঘল।
রহিম রাজার ক্ষতি করলেও রাজা তাকে ক্ষমা করে দিলেন’ রাজার সাথে ‘প্রতিদান’ কবিতার কবির সাদৃশ্য কোথায় মিল খুঁজে পাওয়া যায়-?
উত্তর: ক্ষমাশীলতায়।
কবি পথে পথে কাকে খুঁজে ফিরেছেন?
উত্তর: যে কবিকে পথের বিবাগী করেছে।
যে কবির ঘুম কেড়েছে, তার জন্য কবি কী করেন?
উত্তর: দীঘল রজনী জাগেন।
‘প্রতিদান’ এই কবিতায় কবি কাঁটা পেয়ে কী দান করেছেন?
উত্তর: ফুল।
‘আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর’- এ পঙ্ক্তিতে দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: পরোপকার।
প্রতিদান কবিতাটি লিখেছেন কে?
উত্তর: প্রতিদান কবিতাটি লিখেছেন জসীমউদ্দীন।
জসীমউদ্দীন কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?
উত্তর: ফরিদপুর জেলায়।
জসীমউদ্দীনের মামার বাড়ি কোথায়?
উত্তর: তাম্বুলখানা।
জসীমউদ্দীন কোন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: তাম্বুলখানা।
জসীমউদ্দীনের পৈতৃক নিবাস কোথায়?
উত্তর: ফরিদপুরের গোবিন্দপুর গ্রামে।
জসীমউদ্দীন কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৯০৩ সালের ১ লা জানুয়ারি।
জসীমউদ্দীনের পিতার নাম কী?
উত্তর: আনসারউদ্দীন মোল্ল্যা।
জসীমউদ্দীনের মায়ের নাম কী?
উত্তর: আমিনা খাতুন।
কোন কলেজ থেকে জসীমউদ্দীন বিএ পাশ করেন?
উত্তর: ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে।
জসীমউদ্দীন এম এ ডিগ্রি লাভ করেন কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে-?
উত্তর: কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
কোন বিষয়ে এমএ জসীমউদ্দীন ডিগ্রি লাভ করেন?
উত্তর: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য।
জসীমউদ্দীন কোন কবিতা রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন?
উত্তর: কবর।
জসীমউদ্দীনের ছাত্রাবস্থায় কোন কবিতাটি স্কুল পাঠ্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়?
উত্তর: কবর।
‘কবর’ কবিতাটি কে লেখেন-?
উত্তর: জসীমউদ্দীন।
‘পল্লিকবি’ হিসেবে সমধিক পরিচিত কে ?
উত্তর: জসীমউদ্দীন।
‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ জসীমউদ্দীনের কোন ধরনের রচনা?
উত্তর: কাব্য।
‘যেবা’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: যে বা যিনি।
‘বিরাগী’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: উদাসীন।
‘দীঘল রজনী’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: দীর্ঘ রাত।
ঘুম যে হরেছে শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর: নির্ঘুম রাত কাটানোর কথা বলা হয়েছে।
বিষে ভরা বান শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর: কটু কথা।
সোহাগ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: বাণ।
নিঠুরিয়া শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: নিষ্ঠুর।
ঠাই শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: স্থান বা আশ্রয়।
নিরন্তর শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: নিয়ত বা অবিরাম।
নিজের ঘর ভাঙার প্রতিদান কবিতায় কী বেঁধে দিতে চান?
উত্তর: ঘর।
কেন কবি অন্যের ঘর বেঁধে দিতে চান?
উত্তর: সুন্দর পৃথিবী নির্মাণের মানসে।
করিমের কেউ ক্ষতি করলে সে প্রতিশোধ না নিয়ে উল্টো তার উপকার করে। এখানে করিমের সঙ্গে ‘প্রতিদান’ কবিতার সাদৃশ্য কোথায়?
উত্তর: পরার্থে আত্মনিবেদনে।
কাকে আপন করতে কেঁদে বেড়ান কবি?
উত্তর: যে তাঁকে পর করেছে।
পরকে কবি কী করতে চেয়েছেন?
উত্তর: আপন।
পরকে আপন করতে কবি কী করেন?
উত্তর: কেঁদে বেড়ান।
পথে পথে কবি ফিরছেন কেন?
উত্তর: অনিষ্টকারীর উপকারের জন্য।
কাঁদের জন্য কবি কান্না করেন?
উত্তর: যারা কবিকে আঘাত করেছে।
অনিষ্টকারীর দ্বারা কবি কোথায় আঘাত পেয়েছেন?
উত্তর: বুকে।
কবির বুকে যে আঘাত হেনেছে কবি তার জন্য কী করেন?
উত্তর: কাঁদেন।
কবি জসীমউদ্দীন কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ১৯৭৬ সালের ১৪ ই মার্চ তারিখে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
প্রতিদান কবিতার MCQ প্রশ্ন ও উত্তর এই বিষয় নিয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সমস্ত সকল প্রশ্নের উত্তর-
কবি বিষে ভরা বাণ- এর বিনিময়ে কী দিতে চেয়েছেন?
কবি বিষে ভরা বাণ-এর বিনিময়ে বুকভরা গান দিতে চেয়েছেন।
কবি কীসের বিনিময়ে ফুল দিয়েছেন?
কবি কাঁটার বিনিময়ে ফুল দিয়েছেন।
উপসংহার
এইচএসসি কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রস্ততির জন্য প্রতিদান কবিতা থেকে MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা প্রয়োজন। বিগত সালের এইচএসসি পরীক্ষাগুলোতে প্রতিদান কবিতা থেকে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আগে থেকেই আপনাকে প্রতিদান কবিতার MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততি আরও বেশী শক্তিশালী করতে সোনার তরী কবিতার MCQ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো পড়তে পারেন।
“প্রতিদান কবিতার MCQ” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।
Leave a Reply