মাসি পিসি গল্পের MCQ পড়ে স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নের উওর দিন সহজেই। কেননা বিগত সালের এইচএসসি পরীক্ষাগুলোতে মাসি পিসি গল্প থেকে অনেকগুলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আপনারা যারা এ বছর স্কুল-কলেজ ও চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নিয়মিত পড়াশোনা করছেন। তারা মাসি পিসি গল্পের আলোচ্য বিষয়সহ কতিপয় সকল খুঁটিনাটি প্রশ্নের উত্তর জেনে পরীক্ষার প্রস্তুতি আরও বেশী দৃঢ় করতে পারেন। আজকের এই পোস্টটি মাসি পিসি গল্পের MCQ নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই এই পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইল।
মাসি পিসি গল্পের পাঠ পরিচিতি
‘মাসি পিসি’ এই গল্পটি সর্ব প্রথম প্রকাশিত হয় কলকাতার ‘পূর্বাশা’ পত্রিকায় ১৩৫২ বঙ্গাব্দে বা ১৯৪৬ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে। পরে এটি সংকলিত হয় ‘পরিস্থিতি’ (অক্টোবর ১৯৪৬) নামক গল্পগ্রন্থে। বর্তমানে এটি পাঠ গ্রহণ করা হয়েছে ‘ঐতিহ্য’ প্রকাশিত মানিক-রচনাবলী পঞ্চম খন্ড থেকে। স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার পিতৃমাতৃহীন এক তরুণীর করূণ জীবনকাহিনি নিয়ে রচিত হয়েছে ‘মাসি পিসি’ এই গল্পটি। আহ্লাদি নামক ওই তরূণীর মাসি ও পিসি দুজনই বিধবা ও নিঃস্ব ছিল। তারা তাদের অস্তিত্ব রক্ষার পাশাপাশি বিরুপ বিশ্ব থেকে আহ্লাদিকে রক্ষার জন্য যে বুদ্ধিদীপ্ত ও সাহসী সংগ্রাম পরিচালনা করে সেটাই গল্পটিকে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। অত্যাচারী স্বামী এবং ললসা-উন্মত্ত জেতাদার, দারগা ও গুন্ডা বদমাশের আক্রমন থেকে আহ্লাদিকে নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে দুই বিধবার দায়িক্তশীল ও মানবিক জীবনযুদ্ধ খুবই প্রশংসনীয়। দুর্ভিক্ষের মর্মস্পর্শী স্মৃত্মি, জীবিকা নির্বাহের কঠিন সংগ্রাম, নারী হয়ে নৌকা চালনা ও সবজির ব্যবসায় পরিচালনা প্রভৃতি এ গল্পের বৈচিত্রময় দিক।
মাসি পিসি গল্পের লেখক পরিচিতি
মাসি পিসি গল্পের রচিয়তা হলেন “মানিক বন্দোপাধ্যায়”। তিনি বিহারের সাঁওতাল পরগনার দুমকায় ১৯০৮ সালের ১৯ই মে তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরে। তার পিতার নাম হরিহর বন্দোপাধ্যায় এবং মায়ের নাম নীরদাসুন্দরী দেবী। তার পিত্র প্রদত্ত নাম হলো প্রবোধকুমার বন্দোপাধ্যায়। তার ডাকনাম ছিল মানিক। বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে তিনি পড়াশোনা করেন। মাত্র আটচল্লিশ বছর তিনি এই পৃথীবিতে বেঁচে ছিলেন। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে বিএসসি পড়ার সময়ে মাত্র বিশ বছর বয়সে বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে তিনি প্রথম গল্প ‘অতীসীমামী’ লিখে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এরপর জীবনের বাঁকি আটাশ নিরবিচ্ছিন্নভাবে লিখে গেছেন এর মাঝে বছর তিনেক তিনি চাকরি ও ব্যবসায়িক কাজে নিজেকে জড়ালেও বাকি পুরো সময়টাই তিনি সার্বক্ষণিকভাবে সাহিত্যসেবায় নিয়োজিত ছিলেন।
উপন্যাস ও ছোটগল্প লেখক হিসেবে মানিক বন্দোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যে খ্যাতিমান। অল্প সময়েই তিনি প্রচুর গল্প-উপন্যাস সৃষ্টি করেন। সেই সাথে লিখেছেন কিছু কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ ও ডায়েরি। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য উপন্যাস রয়েছে সেগুলো হলো: জননী, দিবারাত্রীর কাব্য, পদ্মা নদীর মাঝি, পুতুল নাচের ইতিকথা, চিহ্ন প্রভৃতি। তার বিখ্যাত ছোট গল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ প্রাগৈতিহাসিক, সরীসৃপ, সমুদ্রের স্বাদ, কুষ্ঠরোগীর বউ, টিকটিকি, হলুদপোড়া, আজ কাল পরশুর গল্প ইত্যাদি। মানিক বন্দোপাধ্যায় ১৯৫৬ সালের ৩ ডিসেম্বর তারিখে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
মাসি পিসি গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ও চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি সরূপ “মাসি পিসি” গল্প থেকে MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা প্রয়োজন। আপনারা যারা এ বছর স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন তারা “মাসি পিসি” গল্প থেকে বহু নির্বাচনী প্রশ্ন-উত্তরগুলো পড়ে জেনে রাখতে পারেন। নিচে মাসি পিসি গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো দেখে নিন-
মাসি-পিসির মধ্যে ভয়ের লেশটুকু না দেখে ভ্যবাচেকা খেয়ে যায় তার নাম কী?
উত্তর: কানাই।
মাসি-পিসির কাছারিবাড়ি যেতে না চাওয়ার কারণ কী ছিল?-
উত্তর: আহ্লাদির নিরাপত্তা জন্য।
ঘর থেকে কী নিয়ে ফিরে আসে পিসি?
উত্তর: বটি।
ডোবার ধারে কাঁঠাল গাছের ছায়ায় কয়জন ঘুপটি মেরে বসে আছে?
উত্তর: চার-পাঁচজন।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম কী?
উত্তর: প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাক নাম কি ছিল?
উত্তর: মানিক।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মস্থান কোথায় ছিল?
উত্তর: বিহারের সাঁওতাল পরগনার দুমকায়।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৈত্রিক বাড়ি কোথায়?
উত্তর: ঢাকার বিক্রমপুরে।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মসাল কবে?
উত্তর: ১৯০৮ সালের ১৯ই মে তারিখে।
সালতি থেকে ওদের মাথায় খড় তুলে দিচ্ছে কত জন মিলে?
উত্তর: দুই জনে।
কদমছাঁটা রুক্ষ মাথার চুল কার?
উত্তর: কৈলেশের।
মাসি-পিসির কাপড়ের আঁচল কোমরে বাঁধা ছিল -?
উত্তর: সালতির লগি ঠেলছিল বলে।
প্রৌঢ়া বিধবা মানে কী-?
উত্তর: চল্লিশোর্ধ্ব স্বামীহীন নারী।
সালতি শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: শালকাঠ নির্মিত বা তালকাঠের সরু ডোঙ্গা বা নৌকা।
নৌকা দিয়ে আসার সময় আহ্লাদির শরীরে পরনে কী ছিল?
উত্তর: নকশা পাড়ের সস্তা সাদা শাড়ি।
গলা ঝরঝরে আওয়াজ একটু মোটা কার -?
উত্তর: মাসি-পিসির।
আহ্লাদি কেন কৈলাশের কথা কান পেতে শোনে?
উত্তর: স্বামীর খবর জানতে কৌতুহলি বলে।
‘মাসি-পিসি’ গল্পে চায়ের দোকান অবস্থিত কোথায় রয়েছে?
উত্তর: পুলের কাছে।
নিজের যে-চে আহ্লাদিকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর কথা বলেছিল তার নাম কি?
উত্তর: কৈলাশ।
ছলছল দৃষ্টিতে বুড়ো রহমান আহ্লাদির দিকে তাকায় কেন?
উত্তর: আহ্লাদিক দেখে মেয়ের কথা মনে পড়ে বলে।
মাসি-পিসি জগুকে ভালো-মন্দ দশটা জিনিস খাইয়েছে কী বিক্রি করে?
উত্তর: ছাগল।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতার নাম কি?
উত্তর: হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায়।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মায়ের নাম কি?
উত্তর: নীরদাসুন্দরী দেবী।
‘কদমছাঁট’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: মাথার চুল এমনভাবে ছাঁটা যে তা কদমফুলের আঁকার ধারণ করেছে।
‘কাটারি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: কাটবার অস্ত্র।
‘লগি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: হাত ছয়েক লম্বা সরু বাঁশ। নৌকা চালানোর জন্য ব্যবহৃত বাঁশের দন্ড।
‘মেয়া’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘মেয়া’ শব্দের অর্থ হলো ‘মেয়ে’।
পেটে শুকিয়ে লাঠি ঝাঁটা কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: পর্যাপ্ত খাবার না জুগিয়ে কষ্ট দেওয়ার পাশাপাশি লাথি ঝাঁটার মাধ্যেমে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা।
বুড়ো রহমানের মেয়েটা কয় দিন আগে শ্বশুরবাড়িতে মারা গেছে?
উত্তর: অল্পদিন।
বুড়ো রহমানের মেয়েটা শ্বশুড়বাড়িতে যেতে চায়নি কেন?
উত্তর: শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারের ভয়ের জন্য।
কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে আহ্লাদির বাবা, মা, ভাই মারা যায়?
উত্তর: কলেরা।
আহ্লাদির বাবার আশ্রয়ে মাথা গুঁজে মাসি-পিসি আছে কত দিন?
উত্তর: অনেক দিন।
জগুর লাথির চোটে মরমর আহ্লাদি এসে বাপের বাড়ি হাজির হয় কোন্ সময়ে ?-
উত্তর: দুর্ভিক্ষের সময়ে।
আহ্লাদি বাবা গলা কেটে রক্ত দিয়ে মাসি-পিসির ঋণ শোধ দিতে পারলেও অন্ন জোগান দিতে পারবে না তার কারণ কী ছিল?
উত্তর: অর্থনৈতিক সক্ষমতা নেই বলে।
মাসি-পিসি বাজারে তরকারি বিক্রি করতে যায় কেন-?
উত্তর: দুটো পয়সা উপার্জনের জন্য।
মাসি-পিসি সালতি বেয়ে কী বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যায়?
উত্তর: গেরস্তের বাড়তি শাকসবজি-ফলমূল।
‘খুনসুটি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: হাসি-তামাশাযুক্ত বিবাদ-বিসম্বাদ বা ঝগড়া।
বেমক্কা শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: স্থান বহির্ভূত। অসংগত।
আগে কারণে-অকারণে মাসির সাথে পিসির কী বেধে যেত?
উত্তর: কোন্দল।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কত সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন?
উত্তর: ১৯৫৬ সালের ৩ ডিসেম্বর তারিখে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
মাসি পিসি গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তর এই বিষয় নিয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তবে তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্নের উত্তর-
পিসির কোন বিষয়টি মাসির সবচেয়ে অসহ্য লাগত?
পিসির অহংকার-খোঁচা বিষয়টি মাসির সবচেয়ে বেশী অসহ্য লাগত।
মাসি-পিসির ওপর আহ্লাদির সব দায়িত্ব কেন?
মাসি-পিসির ওপর আহ্লাদির সব দায়িত্ব কারণ আহ্লাদির মা-বাবা নেই বলে।
উপসংহার
এইচএসসি কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রস্ততির জন্য মাসি পিসি গল্প থেকে MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা প্রয়োজন। বিগত সালের এইচএসসি পরীক্ষাগুলোতে মাসি পিসি গল্প থেকে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আগে থেকেই আপনাকে মাসি পিসি গল্পের MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততি আরও বেশী শক্তিশালী করতে বিলাসী গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“মাসি পিসি গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তর” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।
Leave a Reply