বিলাসী গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তর জেনে স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নের উওর দিন সহজেই। কেননা বিগত সালের এইচএসসি পরীক্ষাগুলোতে বিলাসী গল্প থেকে অনেকগুলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আপনারা যারা এ বছর এইচএসসি কিংবা স্কুল-কলেজ ও চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নিয়মিত পড়াশোনা করছেন। তারা বিলাসী গল্পের আলোচ্য বিষয়সহ কতিপয় সকল খুঁটিনাটি তথ্য জেনে পরীক্ষার প্রস্তুতি আরও বেশী শক্তিশালী করতে পারেন। আজকের এই পোস্টটি বিলাসী গল্পের MCQ নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
বিলাসী গল্পের পাঠ পরিচিতি
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের “বিলাসী” গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল “ভারতীয় পত্রিকায় ১৩২৫ বঙ্গাব্দে (১৯১৮ সালে)। ‘ন্যাড়া’ নামের এক যুবকের নিজের জবানীতে এই গল্পটি বিবৃত হয়েছে। এই গল্পের কাহীনিতে শরৎচন্দ্র এর প্রথম জীবনে ছায়াপথ ঘটেছে। ‘বিলাসী’ গল্পে বর্ণিত হয়েছে, ব্যতিক্রমধর্মী দুই মানব-মানবীয় চরিত্রের অসাধারণ প্রেমের মহিমা, যা ছাপিয়ে ওঠেছে জাতিগত বিভেদের সংকীর্ণ সীমা। এ গল্পে সংঘটিত একের পর এক ঘটনা এবং বিভিন্ন চরিত্রের মধ্যে সংঘাতের মাধ্যেমেই কাহীনি অগ্রসর হয়। ঘটনার দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মাধ্যমেই কাহীনিতে গতি সঞ্চারিত হয়েছে। লেখক কোন অবস্থান থেকে কাহীনি বলেছেন, সেটা অনেক সময় কাহীনি বর্ণনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লেখক সর্বদর্শী অবস্থান থেকেও কাহীনি বর্ণনা করতে পারেন। যেমনটি দেখা যায় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহের ‘লালসালু’ উপন্যাস এবং মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মাসি পিসি’ গল্পে। তাছাড়াও গল্পটি উত্তম পুরুষের ভাষ্য বর্ণিত হতে পারে।
বিলাসী গল্পের লেখক পরিচিতি
অপরিচিতা গল্পের রচিয়তা হলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি ১৮৭৬ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর তারিখে হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মতিলাল চট্টোপাধ্যায় এবং মায়ের নাম ভুবনমোহিনী দেবী। বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ঔপন্যাসিকের ছোটবেলা কাটে চরম দারিদ্র্যর মধ্যে দিয়ে। মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে মনের ঝোঁকে সন্ন্যাসী হয়ে তিনি গৃহ ত্যাগ করেছিলেন। সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে খ্যাতিত সূত্রে ঘটনাচক্রে এক জমিদারের বন্ধু হয়েছিলেন তিনি। জীবীকার তাগিদে দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন বার্মা মুল্লুকে অর্থাৎ বর্তমান মিয়ানমার দেশটিতে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার জীবনের নানা অভিজ্ঞতা ও বিচিত্র সব মানুষের চরিত্র ফুটিয়ে তুলিয়েছেন তার বিভিন্ন উপন্যাসে। বিশেষ করে সমাজের নিচু সমাজের মানুষ তার সৃষ্ট চরিত্রে অপূর্ব মহিমা চিত্রিত হয়েছে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম মুদ্রিত কুন্তলীন পুরস্কারপ্রাপ্ত ‘মন্দির’ নামে একটি গল্প। তার রচিত বিখ্যাত উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে: দেবদাস, পল্লী-সমাজ, চরিত্রহীন, শ্রীকান্ত, গৃহদাহ, দেনাপাওনা ইত্যাদি। এসব উপন্যাসে তিনি বাঙ্গালী নারীর প্রতিকৃতি অঙ্কনে অসামান্য দক্ষতা দেখিয়েছেন। তার বহু উপন্যাস ভারতবর্ষে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত এবং চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। তাছাড়াও কয়েকটি উপন্যাস বিদেশী ভাষায় অনূদিত হয়েছে। সাহিত্য কর্মের স্বীকৃত হিসেবে ১৯২৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে সম্মানসূচক ডিলিট ডিগ্রী প্রদান করা হয়। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৯৩৮ সালের ১৬ই জানুয়ারি তারিখে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
বিলাসী গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তর
এইচএসসি পরীক্ষা ও চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি সরূপ “বিলাসী” গল্প থেকে MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা প্রয়োজন। আপনারা যারা এ বছর স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন তারা “বিলাসী” এই গল্প থেকে বহু নির্বাচনী প্রশ্ন-উত্তরগুলো পড়ে জেনে রাখতে পারেন। নিচে বিলাসী গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো দেখে নিন-
‘কলি কি সত্যিই উল্টাইতে বসিল’ উক্তিটি কে করেন?
উত্তর: বুড়ো মালোর।
কাকে সেবাযত্ন করে যমের মুখ থেকে বিলাসী ফিরিয়ে এনেছে কে?
উত্তর: ‘মৃত্যুঞ্জয়কে’।
ন্যাড়া কতদিন সন্ন্যাসী জীবন-যাপন করেছিল?
উত্তর: বছর-খানেক।
সাত দিনের বেশী বেঁচে থাকা বিলাসী সইতে না পারার কারণ কি ছিল?
উত্তর: প্রেমের প্রাবল্য।
বিলাসী কেন আত্মহত্যা করে?
উত্তর: স্বামীর শোকে।
সাপে কামড়ানোর কত মিনিট পর ‘মৃত্যুঞ্জয়’ বমি করে?
উত্তর: পনেরো-বিশ মিনিট পর।
অসুস্থ থাকাকালীন সময়ে মৃত্যুঞ্জয় কত দিন অচেতন অবস্থায় ছিল?
উত্তর: ১০-১৫ দিন।
ঘন জঙ্গলের পথ। একটু দেখে পা ফেলে যেয়ো।’ -উক্তিটি কার ছিল?
উত্তর: বিলাসীর।
‘বিলাসী’ গল্পটির লেখকের নাম কি?
উত্তর: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৮৭৬ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাবার নাম কি?
উত্তর: মতিলাল চট্টোপাধ্যায়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মায়ের নাম কি?
উত্তর: ভুবনমোহিনী দেবী।
ন্যাড়ার স্কুলে যাতায়াতের পথ কত ক্রোশ দূরে ছিলে?
উত্তর: চার ক্রোশ।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের কোন শাখায় সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল?
উত্তর: উপন্যাস।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কত বছর বয়সে সন্ন্যাসী হয়েছিলেন?
উত্তর: ২৪ বছর বয়সে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জমিদারের বন্ধু হয়েছিলেন কোন খ্যাতির কারণে?
উত্তর: সংগীতজ্ঞ হিসেবে।
সমাজের নিচু সমাজের মানুষ অপূর্ব মানব-মহিমা নিয়ে চিত্রিত হয়েছে কার উপন্যাসে?
উত্তর: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসে।
শরৎচন্দ্রের কৃতিত্ব কোন ক্ষেত্রে?
উত্তর: অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষের জীবন চিত্রণে।
শরৎচন্দ্র রচিত প্রথম মুদ্রিত গল্পটির নাম কি?
উত্তর: মন্দির।
‘দেবদাস’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কোন ধরনের গ্রন্থ?
উত্তর: উপন্যাস।
‘চরিত্রহীন’ কে রচনা করেছিলেন?
উত্তর: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
শ্রীকান্ত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কোন ধরনের গ্রন্থ?
উত্তর: উপন্যাস।
‘গৃহদাহ’ উপন্যাসটির লেখক কে?
উত্তর: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে কবে ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করে?
উত্তর: ১৯৩৬ সালে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ১৯৩৮ সালের ১৬ই জানুয়ারি।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: কলকাতায়।
ন্যাড়া ও তার সহপাঠীরা দুই ক্রোশ পথ হেঁটে স্কুলে যায় কেন?
উত্তর: কাছাকাছি স্কুল না থাকায়।
সরস্বতী খুশি হইয়া বর দিবেন কী’ -এ কথা বলার কারণ কি ছিল?
উত্তর: ছাত্রদের কষ্ট।
‘রম্ভার কাঁদি’ শব্দের অর্থ কি?
উত্তর: কলার ছড়া।
কামস্কাট্কার রাজধানীর কথা কোন গল্পে উল্লেখ রয়েছে?
উত্তর: বিলাসী।
মাঝে মধ্যই স্কুলের পথে কার সাথে ন্যাড়ার দেখা হতো?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের সাথে।
ন্যাড়া পরীক্ষার উত্তরপত্রে হুমায়ূনের পিতার নাম কী লেখেন?
উত্তর: তোগলক খাঁ।
‘বিলাসী’ গল্পে মৃত্যুঞ্জয় কোন শ্রেণীতে পড়ত?
উত্তর: থার্ড ক্লাসে।
গ্রামের এক প্রান্তে কার বাগান ছিল?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের।
মৃত্যুঞ্জয়ের কীসের বাগান ছিল?
উত্তর: আম-কাঁঠালের।
কিভাবে মৃত্যুঞ্জয়ের জীবিকানির্বাহ হতো ?
উত্তর: আমবাগান জমা দিয়ে।
মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়ার কী কাজ ছিল?
উত্তর: ভাইপোর নানাবিধ দুর্নাম করা মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়ার কাজ ছিল।
খুড়া কার বাগানের অর্ধেক অংশ কে নিজের বলে দাবি করত?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের।
‘উপরের আদালতের হুকুমে’ বলতে এখানে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: স্রষ্টার নির্দেশে।
‘বিলাসী’ গল্পে মৃত্যুঞ্জয় প্রসঙ্গে ‘সুনাম’ কথাটি দ্বারা এখানে কি প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তর: দুর্নাম।
মৃত্যুঞ্জয় শয্যাগত প্রায় কতদিন ছিল?
উত্তর: দেড় মাস।
ন্যাড়া কখন অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়কে দেখতে তার বাড়িতে যায়?
উত্তর: সন্ধ্যায়।
মৃত্যুঞ্জয়ের পোড়াবাড়িতে কিসের বালাই নেই?
উত্তর: প্রাচীরের।
কার জোরে যমরাজ মৃত্যুঞ্জয়ের সাথে সুবিধা করতে পারেনি?
উত্তর: বিলাসীর।
মা-সরস্বতী শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: হিন্দু পুরাণ অনুসারে বিদ্যা ও কলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী বা বীণাপাণি।
ঠিক যেন ফুলদানিতে জল দিয়া ভিজাইয়া রাখা বাসি ফুলের মতো’ -উক্তিটি কার সম্পর্কে বলা হয়েছে?
উত্তর: বিলাসী।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
বিলাসী গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তর এই বিষয় নিয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তবে তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্নের উত্তর-
‘বঁইচি’ শব্দের অর্থ কী?
‘বঁইচি’ শব্দের অর্থ হলো কাটাযুক্ত এরকম ছোট গাছ ও তার ফল।
সাপুড়েদের সবচেয়ে লাভের ব্যবসা কোনটি?
সাপুড়েদের সবচেয়ে লাভের ব্যবসা হলো শিকড় বিক্রি করা।
উপসংহার
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রস্ততির জন্য বিলাসী গল্প থেকে MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা প্রয়োজন। বিগত সালের এইচএসসি পরীক্ষাগুলোতে বিলাসী গল্প থেকে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আগে থেকেই আপনাকে বিলাসী গল্পের MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততি আরও বেশী শক্তিশালী করতে অপরিচিতা গল্পের MCQ প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“বিলাসী গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তর” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ!
Leave a Reply