তাহারেই পড়ে মনে কবিতার MCQ জেনে স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি দৃঢ় করতে পারেন। বিগত সালের স্কুল-কলেজ ও চাকরির পরীক্ষায় তাহারেই পড়ে মনে কবিতা থেকে অনেক MCQ প্রশ্ন এসেছে। তাই আপনারা যারা এ বছর স্কুল-কলেজ ও চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন তারা তাহারেই পড়ে মনে কবিতার কবি পরিচিতি এবং কবিতার আলোচ্য বিষয়সহ কতিপয় তথ্য জেনে পরীক্ষার প্রস্তুতি আরও বেশী শক্তিশালী করতে পারেন। আজকের এই আর্টিকেলটি তাহারেই পড়ে মনে কবিতা MCQ নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।
তাহারেই পড়ে মনে কবিতার মূলভাব
“তাহারেই পড়ে মনে” কবিতাটি “মাসিক মোহাম্মাদী” পত্রিকায় ১৯৩৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। এই কবিতার মাধ্যমে প্রকৃতি ও মানব মনের সম্পর্কের গুরুত্ব প্রকাশ পেয়েছে। সাধারণত প্রকৃতি কবি মনকে দারুন ভাবে প্রভাবিত করে এবং অফুরন্ত আনন্দের সৃষ্টি করে। এই প্রকৃতির অন্যতম একটি সময় হল বসন্ত। বসন্তকালে প্রকৃতি যেন নিজেকে সাজিয়ে অন্যরকম হবে উপস্থাপন করে। এই বসন্ত কবি মনে আনন্দের শিহরণ জাগাবে এবং তিনি সেটিকে ছন্দের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কবির মন যদি কোন কারণে ভারাক্রান্ত হয় তখন বসন্তের সমস্ত সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও কবি মনকে স্পর্শ বা উৎফুল্ল করতে পারে না।
“তাহারেই পড়ে মনে” কবিতায় কবি সুফিয়া কামালের ব্যক্তি জীবনের দুঃখময় ঘটনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ১৯৩২ সালে কবি সুফিয়া কামালের প্রধান সহায়ক ও উৎসাহদাতা স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের আকস্মিক মৃত্যুতে কবির জীবনে প্রচন্ড শূন্যতা নেমে আসে। কবির ব্যক্তিগত জীবনে এবং কাব্য সাধনায় নেমে আসে এক বিষাদময় অধ্যায়। কবির মন আচ্ছন্ন হয়ে যায় পরম রিক্ততার হাহাকারে। “তাহারেই পরে মনে” কবিতাটি আচ্ছন্ন করে আছে সেই বিষাদময়, দুঃসহ, ও বিষন্নতার সুর। তাই বসন্ত এলেও এখন কবি মনে বাজে করুন বিদায়ের বেদনা।
তাহারেই পড়ে মনে কবিতার কবি পরিচিতি
“তাহারেই পড়ে মনে” কবিতার রচিয়তা হলেন সুফিয়া কামাল। তিনি ২০ জুন, ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে শায়েস্তাবাদ, বরিশালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ আবদুল বারী এবং মাতার নাম নওয়াবজাদী সৈয়দা সাবেরা খাতুন। তার শিক্ষাজীবন সম্পর্কে তেমন তথ্য পাওয়া যায়না তবে তিনি স্বশিক্ষায় শিক্ষিত। কর্মজীবনে তিনি কলকাতার একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে তিনি সাহিত্য সাধনা ও নারী আন্দোলনে ব্রতী হন। সুফিয়া কামালের কাব্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সাঁঝের মায়া, মায়া কাজল, উদাত্ত পৃথিবী, মন ও জীবন, প্রশস্তি ও প্রার্থনা, কেয়ার কাঁটা, সোভিয়েতের দিনগুলি, একাত্তরের ডায়েরী।
এছাড়াও শিশুতোষ গ্রন্থ গ্রন্থ রচনা করেছেন যেমনঃ ইতল বিতল, নওল কিশোরের দরবারে। সুফিয়া কামাল অনেক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তার উল্লেখযোগ্য হল বুলবুল ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার। সুফিয়া কামাল ২০ নভেম্বর, ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
তাহারেই পড়ে মনে কবিতার MCQ
“তাহারেই পরে মনে” কবিতাটিতে সুফিয়া কামালের স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের মুত্যুতে গভীর শোকের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আপনারা যারা এ বছর স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন তারা “তাহারেই পড়ে মনে” কবিতার বহু নির্বাচনী প্রশ্ন-উত্তরগুলো জেনে রাখতে পারেন। নিচে তাহারেই পড়ে মনে কবিতার MCQ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো দেখে নিন-
বাংলাদেশের শ্রেষ্ট মহিলা কবির নাম কী?
উত্তরঃ সুফিয়া কামাল।
সুফিয়া কামালের যখন জন্ম হয় তখন মুসলমান নারীরা কীভাবে দিন কাটাত?
উত্তরঃ গৃহবন্দি অবস্থায়।
‘সাঁঝের মায়া’ কাব্যগ্রন্থটি কার লেখা?
উত্তরঃ সুফিয়া কামালের।
‘মায়া কাজল’ কোন জাতীয় রচনা?
উত্তরঃ কাব্য।
সুফিয়া কামাল কী হিসেবে ভূষিত হয়েছেন?
উত্তরঃ জননী সম্ভাষণে।
‘উদাত্ত পৃথিবী’ কাব্যগ্রন্থটি কার রচনা?
উত্তরঃ সুফিয়া কামালের।
‘ইতল বিতল’ সুফিয়া কামালের কী জাতীয় রচনা?
উত্তরঃ শিশুতোষ।
কবি সুফিয়া কামাল কবে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তরঃ ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে।
কবি সুফিয়া কামাল কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তরঃ বরিশাল।
কবি সুফিয়া কামাল কবে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তরঃ ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে।
কবি সুফিয়া কামাল কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তরঃ ঢাকায়।
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কে কবিকে বসন্তের বন্দনাগীত রচনা করতে বলেছেন?
উত্তরঃ কবি ভক্ত।
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি কোন ফুল ফোটার কথা জানতে চেয়েছেন?
উত্তরঃ বাতাবি লেবুর ফুল।
“এমন উন্মনা তুমি?” এটি কার উক্তি?
উত্তরঃ কবির স্বামীর।
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি কোন গান বাজার কথা জানতে চেয়েছেন?
উত্তরঃ আগমনী গান
‘বেজেছে কি আগমনী গান?’ উক্তিটিতে কোন বিষয়টি ফুটে উঠেছে?
উত্তরঃ কবির উদাসীনতা
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কিসের বুকে গন্ধ নেই?
উত্তরঃ মাধবীর
কবিভক্ত কবিকে কী বলে সম্বোধন করেছেন?
উত্তরঃ হে কবি।
কোথায় বসন্তের আবির্ভাব ঘটেছে?
উত্তরঃ পৃথিবীতে।
অলখ শব্দটি ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কোন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তরঃ অলক্ষ।
কবিভক্ত কবিকে কীভাবে বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন?
উত্তরঃ বন্দনা গীতি রচনা করে।
“এখনো দেখনি তুমি?” এখানে ‘নি’ কী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তরঃ নাবাচক ক্রিয়া বিশেষণ।
কবি কী লক্ষ করেননি?
উত্তরঃ বসন্তের আগমন।
কবি সুফিয়া কামাল উষ্মনা কেন?
উত্তরঃ স্বামীকে হারিয়ে।
কবিভক্তরা কবিকে প্রশ্ন করেছেন কেন?
উত্তরঃ কবি উন্মনা বলে।
‘রচিয়া’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ রচনা করে
বসন্তের প্রতি কবি বিমুখ কেন?
উত্তরঃ কবিমন শোকে মুহ্যমান বলে।
‘পুষ্পারতি’ শব্দটির মানে কী?
উত্তরঃ ফুলের বন্দনা।
‘ঋতুর রাজন’ বলতে কবি কাকে বুঝিয়েছেন?
উত্তরঃ বসন্তকে।
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় ব্যবহৃত ‘কুহেলি উত্তরী’ শব্দটি কী অর্থ বহন করে?
উত্তরঃ কুয়াশার চাদর।
কবি সুফিয়া কামাল মূলত কাকে মাঘের সন্ন্যাসী বলেছেন?
উত্তরঃ সৈয়দ নেহাল হোসেনকে।
প্রকৃতি রিক্ততার রূপ ধারণ করে কোন ঋতুতে?
উত্তরঃ শীত ঋতুতে
কবিমন কিসে আচ্ছনড়ব হয়ে আছে?
উত্তরঃ রিক্ততার হাহাকারে।
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কে, কাকে প্রশ্ন করেছে?
উত্তরঃ কবিভক্ত কবিকে।
কবি সুফিয়া কামালকে সমস্ত সৌন্দর্য স্পর্শ করতে পারে না কেন?
উত্তরঃ কবি বিরহকাতর বলে।
বসন্ত কবি সুফিয়া কামালের মনে কোনো সাড়া জাগাতে পারছে না কেন?
উত্তরঃ কবির বেদনার্ত হৃদয়ের জন্য।
বসন্ত কবির কাছে অর্থহীন, কারণ-
উত্তরঃ প্রিয়জন কাছে নেই বলে।
‘সমীর’ শব্দটির প্রতিশব্দ কোনটি?
উত্তরঃ বাতাস।
‘পাথার’ অর্থ কী?
উত্তরঃ সমুদ্র।
‘ধরা’ অর্থ কী?
উত্তরঃ পৃথিবী।
কে কবিকে বসন্তকে বরণ করে নিতে বলেছেন?
উত্তরঃ কবিভক্ত।
কবি সুফিয়া কামালের প্রথম স্বামী কবে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তরঃ ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে।
কবির ব্যক্তিজীবন ও কাব্যসাধনার ক্ষেত্রে এক দুঃসহ বিষণ্নবতা নেমে আসে কেন?
উত্তরঃ স্বামীবিয়োগে।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
তাহারেই পড়ে মনে কবিতার MCQ নিয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্নের উত্তর-
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবির নীরবতার কারণ কী?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবির নীরবতার কারণ হল ১৯৩২ সালে প্রিয়জন স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের হারানোর শোক ও গভীর বেদনাবোধ।
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি ১৯৩৫ সালে প্রথম “মাসিক মোহাম্মদী” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি কোন ছন্দে লেখা?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা।
উপসংহার
স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রস্ততির জন্য “তাহারেই পড়ে মনে” কবিতা সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন। তাই আগে থেকেই আপনাকে তাহারেই পড়ে মনে কবিতার MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা অত্যাবাশক। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার প্রস্ততি আরও বেশী শক্তিশালী করতে কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ কয়টি ও কি কি এ সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“তাহারেই পড়ে মনে কবিতার MCQ” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ!