নিমগাছ গল্পের MCQ পড়ে স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের উত্তর দিন সহজেই। বিগত সালের উচ্চ মাধ্যমিক কিংবা চাকরির পরীক্ষাগুলোতে নিমগাছ গল্প থেকে অনেকগুলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আপনারা যারা এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক এবং চাকরির পরীক্ষার জন্য নিয়মিত পড়াশোনা করছেন তারা নিমগাছ গল্প সম্পর্কে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর জেনে রাখতে পারেন। আজকের এই পোস্টটি নিমগাছ গল্পের MCQ নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।
নিমগাছ গল্পের পাঠ পরিচিতি
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের (বনফুল) অদৃশ্যলোক (১৯৪৭) গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত “নিমগাছ” গল্প। এই গল্পটির সংক্ষিপ্ত অবয়বের মধ্যে লেখক বিপুল বক্তব্য উপস্থাপনের যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তা বাংলা সাহিত্যে বিরল। নিমগাছের বর্ণনা, এর পাতা, বাকল, ছায়ার ইত্যাদির বাহ্যিক উপকারিতা কবিতার মতো করে বর্ণনা করা হয়েছে এই গল্পের মাধ্যেমে। কবিরাজ মহাশয় তাঁর চিকিৎসার কাজে, সাধারণ মানুষ তার প্রাত্যহিক প্রয়োজনে নিমগাছকে অনবরত ব্যবহার করে আসছে এবং সে থেকে তারা ভালো সুফল পাচ্ছে। কিন্তু কেউ এই নিমগাছকে সামান্য যত্ন করে না। একজন কবি একদিন নিমগাছের গুণ ও রুপের প্রশংসা করে। নিমগাছের ভালো লাগে ঔ লোককে এবং সে তার সাথে চলে যেতে চায়। কিন্তু মাটির গভীরে তার শিকড়। গাছটি যেতে পারে না। এটা হচ্ছে মূলত একটি প্রতীকি গল্প। এই গল্পটির ম্যাজিক বাক্য হলো শেষটি, যেখানে লেখক জুড়ে দিয়েছেন সীমাহীন কথার আখ্যান।
নিমগাছ গল্পের লেখক পরিচিতি
নিমগাছ গল্পের রচিয়তা হলেন বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়। তার ছদ্মনাম বনফুল। তিনি ১৮৯৯ সালের ১৯শে জুলাই তারিখে বিহারের পূর্নিয়ার অন্তর্গত মণিহার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ডা. সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। বনফুল পূর্নিয়ার সাহেবগঞ্জ ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯১৮ সালে ম্যাট্রিক, পাশ করেন। হাজিরাবাগের সেন্ট কলম্বাস কলেজ থেকে ১৯২০ সালে আই.এস.সি এবং ১৯২৭ সালে পাটনা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম.বি পাশ করেন। ম্যাডিকেল অফিসার পদে চাকরির মাধ্যেমে বনফুলের কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯১৮ সালে “শনিবারের চিঠিতে” ব্যাঙ্গ কবিতা ও প্যারোডি লিখে তার সাহিত্য অঙ্গনে প্রবেশ হয়। প্রবাসী পত্রিকায় তিনি একপাতা-আধাপাতার গল্প লিখতেন। গল্পগুলো ছিল আকারে ক্ষুদ্রাকৃতির কিন্তু বক্তব্যগুলো ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। তার উল্লেখযোগ্য গল্প গ্রন্থগুলো হলোঃ বনফুলে গল্প, বনফুলে আরো গল্প, বাহুল্য, বিন্দুবিসর্গ, অনুগামিনী, তন্মী, ঊর্মিমালা, এবং দূরবীন ইত্যাদি। বাস্তব জীবনেও জ্ঞান বিজ্ঞানের বিচিত্র উপাদান তাঁর গল্প ও উপন্যাসে নিপুনভাবে প্রকাশিত হয়েছে। বনফুলের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলো হলো- তৃণখন্ড, কিছুক্ষণ, দৌরথ, নির্মোক, সে ও আমি, জঙ্গম, অগ্নি ইত্যাদি। এছাড়াও বনফুলের কবিতা, ব্যঙ্গ কবিতা, চতুর্দশপদী, জীবনি নাটক, শ্রীমধুসুদন, বিদ্যাসাগর প্রভৃতি তার অনন্যা সাধারণ সৃষ্টি। বিভিন্ন পুরস্কার সহ তিনি পদ্মভূষণ উপাধি লাভ করেন। ১৯৭৯ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি তারিখে বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় (বনফুল) কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
নিমগাছ গল্পের MCQ সমূহ
উচ্চ মাধ্যমিক ও চাকরির পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য নিমগাছ গল্প সম্পর্কে বহু নির্বাচনী প্রশ্ন ও উত্তর পড়ে মুখস্থ রাখা প্রয়োজন। কেননা বিগত বছরগুলোতে নিমগাছ গল্প থেকে অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছে। তাই আপনার পরীক্ষার প্রস্তুতি একধাপ এগিয়ে নিতে নিমগাছ গল্পের MCQ পড়ে মুখস্থ করে রাখতে পারেন। নিচে নিমগাছ গল্পের MCQ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো দেখে নিন-
বনফুলের প্রকৃত নাম কী?
উত্তর: বনফুলের প্রকৃত নাম বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়।
কোন রোগের মহৌষধ নিমপাতা?
উত্তর: চর্ম রোগের।
‘নিমগাছ’ গল্পের ম্যাজিক লাইন কোনটি ছিল?
উত্তর: শেষ লাইন।
নিমগাছের কোন অংশটি দাঁতের জন্য খুবই উপকারী?
উত্তর: ডাল।
নিমের হাওয়া ভালো, থাক, কেটো না’—কে বলেছেন?
উত্তর: বিজ্ঞরা।
‘বাহ, কী সুন্দর পাতাগুলি’—বাক্যটির মধ্য কিসের প্রকাশ ঘটেছে?
উত্তর: মুগ্ধতার।
‘নিমগাছটার ইচ্ছে করতে লাগল, লোকটার সঙ্গে চলে যায়’— ‘লোকটা’ কে ছিল?
উত্তর: কবি।
‘নিমগাছ’ গল্পে নিমগাছটি কার প্রতীক?
উত্তর: সর্বংসহা নারী।
মাটির ভিতরে শিকড় অনেক দূরে চলে গেছে—এখানে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: শিকড়ের বিস্তার।
বনফুল কোন প্রতিষ্ঠান থেকে এম.বি পাশ করেছেন?
উত্তর: পাটনা মেডিক্যাল কলেজ।
কোনটি বনফুলের লেখা জীবনী নাটক?
উত্তর: শ্রীমধুসূদন।
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় কোন উপাধি লাভ করেন?
উত্তর: পদ্মভূষণ।
বনফুলের লেখা প্রথম প্রকাশিত হয় কত সালে?
উত্তর: ১৯১৮ সালে।
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের রচিত গ্রন্থ কোনটি?
উত্তর: বনফুলের গল্প।
লেখালেখির ভেতর দিয়ে বনফুলের কী ধরনের সাহিত্য-অঙ্গনে প্রবেশ ঘটে?
উত্তর: ব্যঙ্গ-কবিতা ও প্যারডি।
বনফুলের লেখা গল্পগ্রন্থ নিচের কোনটি ?
উত্তর: বাহুল্য।
বনফুলের সাহিত্য-অঙ্গনে আত্মপ্রকাশ ঘটে নিচের কোনটির মাধ্যমে?
উত্তর: শনিবারের চিঠি।
চাকরির মাধ্যমে বনফুলের কর্মজীবনের সূচনা ঘটে কী হিসেবে ?
উত্তর: মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে।
বনফুল মৃত্যুবরণ করেন কত সালে?
উত্তর: ১৯৭৯ সালে।
বনফুলের মৃত্যুস্থান কোথায়?
উত্তর: কলকাতা।
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মস্থান কোথায়?
উত্তর: বিহারের পূর্ণিয়া।
বাড়ির বউ নিমগাছটির মতো— কে?
উত্তর: অবহেলিত ও উপকারী।
বনফুল কোন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৮৯৯ সালে।
বনফুলের বাবার নাম কী?
উত্তর: সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায়।
নিমগাছ না যেতে পেরে কী করল?
উত্তর: স্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে রইল।
‘নিমগাছ’ গল্পের উপস্থাপনকৌশল–
উত্তর: নাটকীয় ও কাব্যধর্মী।
বনফুল আই.এসসি পাস করেন কত সালে-?
উত্তর: ১৯২০ সালে।
বনফুল এম.বি পাস করেন কত সালে?
উত্তর: ১৯২৭ সালে।
নিমগাছ’ গল্পের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কী ছিল?
উত্তর: আত্মত্যাগ ও উপেক্ষা।
নিমের কচি ডাল চিবোলে কী উপকার পাওয়া যায়?
উত্তর: চোখ ভালো থাকে।
যকৃতের জন্য কোনটি উপকারী?
উত্তর: নিমের পাতা।
নিমের কোন অংশটি অনেকেই চিবিয়ে থাকে?
উত্তর: কচি ডাল।
কিসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কবিরাজরা?
উত্তর: নিমের পাতার।
কোনটি ঘটলে বিজ্ঞরা খুশি হন?
উত্তর: বাড়ির পাশে নিমগাছ গজালে।
“একটা নতুন ধরনের লোক এলো” – কে এলো?
উত্তর: কবি।
বিজ্ঞরা নিমগাছ কাটতে নিষেধ করেন কোন যুক্তিতে?
উত্তর: নিমের হাওয়া অনেক ভালো।
“সে আর এক আবর্জনা” – কী?
উত্তর: বাঁধানো শান।
বনফুল জন্মগ্রহণ করেন কোন গ্রামে?
উত্তর: মণিহার।
বনফুলের লেখা প্রথম প্রকাশিত হয় কত সালে?
উত্তর: ১৯১৮ সালে।
নিচের কোনটির মাধ্যমে বনফুলের সাহিত্য অঙ্গনে আত্মপ্রকাশ ঘটে?
উত্তর: শনিবারের চিঠি।
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের রচিত গ্রন্থ কোনটি?
উত্তর: বনফুলের গল্প।
নিচের কোনটি বনফুলের লেখা গল্পগ্রন্থ?
উত্তর: বাহুল্য।
বনফুলের লেখা জীবনী নাটক কোনটি ?
উত্তর: শ্রীমধুসূদন।
কোন উপাধি লাভ করেন বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়?
উত্তর: পদ্মভূষণ।
‘নিমগাছ’ গল্পে কী সিদ্ধ করার কথা উল্লেখ আছে?
উত্তর: নিমের ছাল।
নিমের কোন অংশ শিলে পেষার কথা বলা হয়েছে নিমগাছ গল্পে?
উত্তর: পাতা।
উপকার পাওয়ার জন্য নিমের কোন অংশটি অনেকে কাঁচা খায়?
উত্তর: পাতা।
নিমের পাতা ভেজে কিসের সাথে খাওয়া হয়?
উত্তর: বেগুনের সাথে।
কবিরাজরা প্রশংসায় পঞ্চস্থ কোন কারণে?
উত্তর: নিমের উপকারিতা।
কোনটি করতে নিষেধ করেন বিজ্ঞরা?
উত্তর: নিমগাছ কাটতে।
নিমগাছ’ গল্পে অযত্নের কারণে নিমগাছের চারধারে কী তৈরি হয়?
উত্তর: আবর্জনার স্তূপ।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
নিমগাছ গল্পের MCQ এই বিষয় নিয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তবে তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সমস্ত সকল প্রশ্নের উত্তর-
‘সে ও আমি’ বনফুলের কোন ধরনের রচনা?
সে ও আমি বনফুলের একটি গল্লগ্রন্থ।
কবিরাজদের চরিত্রে কী ফুটে উঠেছে?
কবিরাজদের চরিত্রে স্বার্থপরতা ফুটে উঠেছে।
উপসংহার
এইচএসসি পরীক্ষায় কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রস্ততির জন্য নিমগাছ গল্প থেকে MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা প্রয়োজন। বিগত সালের পরীক্ষাগুলোতে নিমগাছ গল্প থেকে অনেকগুলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আগে থেকেই আপনাকে নিমগাছ গল্পের MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততি আরও বেশী শক্তিশালী করতে সুভা গল্পের MCQ এ সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“নিমগাছ গল্পের MCQ” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে, তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ!
Leave a Reply