বহিপীর নাটক MCQ পড়ে স্কুল-কলেজ কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের উত্তর দিন সহজেই। বিগত সালের উচ্চ মাধ্যমিক কিংবা চাকরির পরীক্ষাগুলোতে বহিপীর নাটক থেকে অনেকগুলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আপনারা যারা এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক এবং চাকরির পরীক্ষার জন্য নিয়মিত পড়াশোনা করছেন তারা বহিপীর নাটক সম্পর্কে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর জেনে রাখতে পারেন। আজকের এই পোস্টটি বহিপীর নাটক MCQ নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।
বহিপীর নাটকের পটভূমি
উনিশ শতকের শেষভাগে বা বিশ শতকের শুরুতে বহিপীর পটভূমিতে লেখা। নাটকে দেখতে পাওয়া যায়, জমিদার হাতেম আলি সূর্যাস্ত আইনে তার সমস্ত জমিদারী হারাচ্ছেন। সূর্যাস্ত আইন প্রণীত হয় ১৭৯৩ সালে আর এ আইনে অনেক জমিদার জমিদারী হারাতে থাকে এ সময় পর্যন্ত। সে সময়ে বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রচলিত পীরপ্রথা, অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার ফুটে উঠেছে এ নাটকে। বহিপীর চরিত্রটিকে ধনী-গরিব সবাই অসম্ভব ভয় ও সম্মান করে। গ্রামের সাধারণ মানুষ পীরকে পেলে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পীরকে তারা বিভিন্নভাবে বাবা মনে করে। ধন সম্পদ এমনকি নিজের কন্যাকেও দান করে দেয়। এ নাটকটি শেষ পর্যন্ত আলোর পথ দেখায় ও এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দেয়। বহিপীর নামটির একটি প্রতীকী তাৎপর্যও রয়েছে। মূলত মুসলমান সমাজে পীরপ্রথার সৃষ্টি হয় কুসংস্কার ও ধর্মীয় বইয়ের পাতা থেকে। মুসলিম জাতি তথা ইসলাম ধর্মের সুফিবাদী ব্যাখা অনুসারেই পীর সমাজের সৃষ্টি হয়েছে।
বহিপীর নাটকের নাট্যকর পরিচিতি
বহিপীর নাটকের রচিয়তা হলেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ। তিনি ১৯২২ সালের ১৫ই আগস্ট তারিখে চট্টগ্রাম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নাম সৈয়দ আহমাদউল্লাহ। তার পিতা ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। তার মায়ের নাম নাসিমা আরা খাতুন। তিনি ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত এবং সংস্কৃতিকমনা। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ মাত্র আট বছর বয়সে তার মাকে হারান। তিনি ১৯৩৯ সালে কুড়িগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৪১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। তাঁর আনুষ্ঠানিক ডিগ্রি ছিল ডিস্টিঙ্কশনসহ বিএ। তার পেশা জীবন শুরু হয় দৈনিক স্টেটম্যান পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যেমে। মাঝখানে তিনি কিছুদিন বেতারে কাজ করেছেন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি প্যারিসে থেকেই বাংলাদেশের জন্য কাজ করেছেন। তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থের নাম নয়নচরা প্রকাশিত হয় ১৯৪৫ সালে। তারপর একের পর এক প্রকাশিত হয় উপন্যাস লালসালু (১৯৪৯), বহিপীর নাটক (১৯৬০), সুড়ঙ্গ (১৯৬৪), উপন্যাস চাঁদের অমাবস্যা (১৯৬৪), গল্পগ্রন্থ দুই তীর ও অন্যন্য গল্প (১৯৬৫), এবং কাঁদো নদী কাঁদো (১৯৬৮)। তিনি সাহিত্য কর্মের জন্য পিএন পুরস্কার (১৯৫৫), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬১), আদমজী পুরস্কার (১৯৬৫) ও একুশে পদক (মরণোত্তর ১৯৮৪) লাভ করেন। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ১৯৭১ সালে অক্টোবার মাসের মৃত্যুবরণ করেন।
বহিপীর নাটক MCQ সমূহ
উচ্চ মাধ্যমিক ও চাকরির পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য বহিপীর নাটক সমন্ধে বহু নির্বাচনী প্রশ্ন ও উত্তর পড়ে রাখা প্রয়োজন। কেননা বিগত বছর বহিপীর নাটক থেকে অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছে। তাই আপনার পরীক্ষার প্রস্তুতি একধাপ এগিয়ে নিতে বহিপীর নাটকের MCQ পড়ে মুখস্থ করে রাখতে পারেন। নিচে বহিপীর নাটক MCQ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো দেখে নিন-
‘আমি যেন কোরবানির বকরি’ বাক্যটির মধ্য প্রকাশ কী প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তর: উৎপ্রেক্ষা।
পীর সাহেব তাহেরাকে কাছে রাখার জন্য কী উপায় বের করেন?
উত্তর: তাহেরাকে আদর স্নেহ দিতে চান।
কোনো মানুষ হঠাৎ আশাতীত কাজ করতে পারে’ এই উক্তিটি কার ছিল?
উত্তর: বহিপীরের।
সারা বিকাল ধরে, সারা সন্ধ্যা ধরে হাতেম আলির কিসের আশায় কাটল?
উত্তর: বাল্যবন্ধু আনোয়ারের আশায়।
নিমরাজি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: প্রায় সম্মত।
সান্ধ্য আইনে জমিদারি নিলামে উঠতে বসেছে কার?
উত্তর: হাতেম আলির।
কোন কথা সত্যি নয় হাতেম আলির ?
উত্তর: তিনি অসুস্থ।
কার পক্ষে কথা বলে হাশেম ?
উত্তর: তাহেরার পক্ষে।
তাহেরা সবাইকে কী অনুরোধ করার কথা বলে?
উত্তর: পীর সাহেবকে তার খবর না দেওয়ার জন্য।
‘জানে বাঁচিয়া আছি ইহাই যথেষ্ট’ এখানে বাঁচিয়া ও ইহাই শব্দের চলিত রূপ কী হবে?
উত্তর: বেঁচে ও এটাই।
জমিদারের ছেলে-মেয়ে কতজন রয়েছে?
উত্তর: একজন ছেলে।
পড়াশোনা শেষ করে হাশেম আলি কী করতে চায়?
উত্তর: ছাপাখানা দিতে চায়।
তাহেরার সঙ্গে বহিপীরের সাদৃশ্য কোথায়?
উত্তর: বিপদে পড়ে জমিদারের বজরায় আশ্রয় গ্রহণ।
বজরা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কাঠের কামরা ও ছাদযুক্ত বৃহৎ নৌকাবিশেষ।
বজরার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নৌকা কত মিনিটের মধ্যে আধা-ডোবা হয়ে গেল?
উত্তর: এক মিনিটের মধ্য।
‘এক-আধটু ঠাট্টা-মস্করা করতেও শুরু করেছে’ কারা এ কাজটি করতে শুরু করেছে?
উত্তর: গ্রামের লোকেরা।
তাহেরা বিপদে পড়েছে দেখে খোদেজা তাকে বজরায় তুলে নেয়। এখানে খোদেজা চরিত্রের কোন দিকটি প্রকাশ পায়?
উত্তর: পর দুঃখকাতরতা।
কেমন চরিত্রের মানুষ হাতেম আলি ?
উত্তর: স্থিতধী,আত্মনিমগ্ন ও উচ্চ মানবিক চেতনাসম্পন্ন চরিত্রের মানুষ হাতেম আলি।
শহরে কিসের জন্য রওয়ানা হয়েছেন জমিদার ?
উত্তর: অর্থ সংগ্রহের জন্য।
ধর্মীয় কুসংস্কার ও সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতীক চরিত্রটি কে ?
উত্তর: হাশেম আলি।
তাহেরাকে উদ্ধার করতে হাশেমকে কী পিছু টলাতে পারেনি?
উত্তর: মায়ের সাবধান বাণী, বহিপীরের ভীতি প্রদর্শন ও পিতার করুণ মুখ।
কেমন মানুষ হাশেম আলি?
উত্তর: মানবিক অনুভূতিসম্পন্ন মানুষ।
কোন বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে হাশেম আলির চরিত্রে?
উত্তর: মানবীয় মূল্যবোধ।
হাশেম আলি কার পুত্র/ছেলে?
উত্তর: জমিদারের।
তাহেরাকে কোন শতকের প্রারম্ভে নারী অধিকার ও জাগরণের প্রতীক চরিত্র বলা যেতে পারে?
উত্তর: বিশ।
তাহেরা পীরের সঙ্গে বিয়েতে রাজি না হয়ে পালিয়ে আশ্রয় পেয়েছে কোথায়?
উত্তর: শহরগামী বজরায়।
বহিপীর মুরিদদের কাছ থেকে কী পান?
উত্তর: অর্থ সম্পদ।
‘বহিপীর’ কত বছর অন্তর শিষ্য ও মুরিদদের বাড়িতে ঘুরে বেড়ান?
উত্তর: দুই বছর অন্তর।
বাংলা নাটকের প্রতিযোগিতায় কোন নাটক পুরস্কার লাভ করে?
উত্তর: বহিপীর।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ সাহিত্যকর্মের জন্য কোন পুরস্কার লাভ করেন?
উত্তর: পিইএন পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও একুশে পদক লাভ করেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের পক্ষে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ কোথা থেকে কাজ করেন?
উত্তর:প্যারিসে থেকে।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ পেশাগত জীবন শুরু হয় কোন পেশার মধ্য দিয়ে?
উত্তর: সাংবাদিকতার মাধ্যেমে।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ মাধ্যমিক পাস করেন কত সালে?
উত্তর: ১৯৩৯ সালে।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন কত সালে?
উত্তর: ১৯৪১ সালে।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর মায়ের নাম কী?
উত্তর: নাসিম আরা খাতুন।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ পিতার নাম কী?
উত্তর: সৈয়দ আহমাদউল্লাহ।
পূর্ব পর্যন্ত কলকাতা ছিল বাংলা নাট্যচর্চার প্রাণকেন্দ্র কত সালের?
উত্তর: ১৯৪৭ সালের।
গ্রিক কোন শব্দ থেকে Drama শব্দটি এসেছে?
উত্তর: Dracin।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
বহিপীর নাটক MCQ এই বিষয় নিয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তবে তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সমস্ত সকল প্রশ্নের উত্তর-
বহিপীরের মতে, মানুষ কি দিয়ে সবকিছু বিচার করে ?
বহিপীরের মতে, মানুষ সময়ের দীর্ঘতা দিয়ে সবকিছু বিচার করে।
‘বহিপীর’ নাটকটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় কত সালে?
‘বহিপীর’ নাটকটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৯৬০ সালে।
উপসংহার
এইচএসসি পরীক্ষায় কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রস্ততির জন্য বহিপীর নাটক থেকে MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা প্রয়োজন। বিগত সালের পরীক্ষাগুলোতে বহিপীর নাটক থেকে অনেকগুলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন এসেছে। তাই আগে থেকেই আপনাকে বহিপীর নাটক MCQ পড়ে মুখস্থ রাখা উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততি আরও বেশী শক্তিশালী করতে সিরাজউদ্দৌলা নাটকের MCQ এ সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“বহিপীর নাটক MCQ” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে, তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ!
Leave a Reply