বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর কয়টি ও কি কি?

Sea Port of Bangladesh

সর্বশেষ আপডেটঃ

/

ক্যাটাগরিঃ

,

বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর কয়টি এই সম্পর্কে পড়ে বিসিএস কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের উত্তর দিন সহজেই। বিগত সালের সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলোতে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর সম্পর্কিত অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এসেছিল। তাই আপনারা যারা এ বছর বিসিএস পরীক্ষার জন্য নিয়মিত পড়াশোনা করছেন তারা সমুদ্র বন্দর সম্পর্কে পড়ে জেনে রাখতে পারেন। আজকের এই পোস্টটি বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর কয়টি ও কি কি এই বিষয়গুলো নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

সমুদ্র বন্দর কি?

জাহাজে পণ্যদ্রব্য ভরাট এবং খালাসের জন্য সমুদ্র তীরবর্তী স্থাপনাই হচ্ছে সমুদ্র বন্দর। বিশ্বের প্রায় ৮০% লোক সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাস করে। সমুদ্র তীরবর্তী দেশগুলির অর্থনীতির জন্য সমুদ্র বন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম। সূদুর প্রাচীনকাল থেকেই উপকূলীয় দেশগুলোতে সমুদ্রবন্দর গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর গুরুত্বপূর্ণ আমদানি-রপ্তানি অবকাঠামো।

বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর কয়টি ও কি কি? 

বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় এখানে সুদূর অতীতকাল থেকেই নদীপথে বিভিন্ন পণ্য ও যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া দেশের সমুদ্র উপকূলে গড়ে উঠেছে বিশাল বৃহৎ সমুদ্র বন্দর। তাই আপনারা এ বছর বিসিএস পরীক্ষার জন্য নিয়মিত পড়াশোনা করছেন তারা বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর সম্পর্কে সকল খুঁটিনাটি বিষয়গুলো জেনে পরীক্ষার প্রস্তুতি আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর কয়টি ও কি কি এ বিষয়ে নিম্নে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো –

১। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর 

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত সমুদ্র বন্দর হলো চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর। এটি দেশের বৃহুত্তম প্রধান সামুদ্রিক বন্দর। এটি কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত। ইংরেজ শাসন আমলের শুরুর দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সেলামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলি নদীতে কাঠের জেটি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মিত হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়। ১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং জেটি নির্মিত হয়। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে ২৫ এপ্রিল তারিখে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। সমুদ্র হতে কয়েক মাইল অভ্যন্তরে গভীর সমুদ্রে নোঙর করার সুবিধাই এ বন্দরের একমাত্র প্রধান বৈশিষ্ট্য। চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরের সমুদ্র সীমা হলো পতেঙ্গা সংকেত কেন্দ্র থেকে সমুদ্রাভিমুখে সাড়ে ৫ মাইল। আর কর্ণফুলী নদীর মোহনা থেকে উজানে হালদা নদীর মোহনা অবধি ২৩ মাইল এলাকা চট্টগ্রাম বন্দর এর অধিকারভুক্ত এলাকা।

২। মোংলা সমুদ্র বন্দর

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে খুলনা বিভাগে অবস্থিত সামুদ্রিক বন্দর হলো মোংলা সমুদ্র বন্দর। এটি বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম এবং ২য় ব্যস্ততম সামুদ্রিক বন্দর। এটি  বাংলাদেশের খুলনা মহানগরীর দক্ষিণ-পূর্বে পশুর নদীর তীরে অবস্থিত। এই সমুদ্র বন্দরটি ১৯৫০ সালের ১ লা ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বন্দরের আদি বা পুরাতন নাম ছিল চালনা বন্দর। এটি প্রথমে খুলনার চালনাতে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে বন্দরের জন্য প্রয়োজনীয় ভৌগোলিক অবস্থান গত সুবিধার কারণে চালনা থেকে কিছুদুর সামনে খুলনা-বাগেরহাট জেলার সীমান্তে মোংলায় স্থানান্তরিত করা হয়। 

৩। পায়রা সমুদ্র বন্দর 

বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম সামুদ্রিক বন্দর হলো পায়রা সমুদ্র বন্দর। বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় অবস্থিত দেশের তৃতীয় বৃহত্তম সামুদ্রিক বন্দর। এই সামুদ্রিক বন্দর-টি ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়া গ্রামে এর ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট সমুদ্র বন্দরটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু কার্যকর হয়।

৪। মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর 

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার মাতারবাড়ি এলাকায় অবস্থিত প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দর। এই প্রস্তাবিত মাতারবাড়ি সামুদ্রিক বন্দরের গভীরতা ১৬ মিটার হওয়ায় প্রতিটি জাহাজ ৮ হাজারের বেশি কন্টেইনার আনতে পারবে। বর্তমানে ৯-মিটারের চেয়ে কম খসড়া গভীরতার জাহাজ দেশের দুটি সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম এবং মোংলাতে প্রবেশ করতে পারে। মাতারবাড়ি বন্দর স্থাপনের কাজে প্রায় ১৪.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি নৌ-চ্যানেল তৈরি করছে জাইকা প্রতিষ্ঠান। প্রধান ন্যাভিগেশনাল চ্যানেল ৩৫০ মিটার প্রশস্ত। সে সাথে বন্দরের অর্থায়নে নির্মাণ করা হবে ১০০ মিটার দীর্ঘ জেটি। এই মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দরে ১ম জাহাজ ভিড়ে ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল তারিখে। 

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর কয়টি ও কি কি এই বিষয়ে আপনার মনে প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তরগুলো- 

বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর কোনটি? 

বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর হলো চট্টগ্রাম সমুদ্র।   

চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠা হয় কত সালে? 

চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৮৭ সালে। 

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সমুদ্র বন্দর কোনটি? 

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সমুদ্র বন্দর পায়রা সমুদ্র বন্দর। 

মংলা সমুদ্র বন্দর কোথায় অবস্থিত-? 

মংলা সমুদ্র বন্দর বাগেরহাট জেলার পশুর নদীর তীরে অবস্থিত।

 চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর কোথায় অবস্থিত-? 

 চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামে জেলার কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত। 

উপসংহার

বিসিএস কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর সম্পর্কে পড়ে রাখা প্রয়োজন। বিগত সালের পরীক্ষাগুলোতে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর সম্পর্কিত বিষয় থেকে অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছে। তাই আগে থেকেই আপনাকে সমুদ্র বন্দর সম্পর্কে পড়ে রাখা উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততি আরও বেশী শক্তিশালী করতে বাংলাদেশের নদের তালিকা সমূহ এই সম্পর্কে পড়তে পারেন।

“বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর কয়টি ও কি কি?” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে, তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *